লোক টানতে পুরীর রথের আদল হবিবপুরে

হবিবপুরের রথকে আরও আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগী হল ইস্কন কর্তৃপক্ষ। এ বার পুরীর জগন্নাথদেবের রথের অনুকরণে তৈরি হচ্ছে তাদের রথ। কোতোয়ালির দুর্গাপুরে শৈলেন দাস নামে এক কারিগরের বাড়িতে কাঠ, লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৩৭ ফুট উঁচু, ২৫ ফুট লম্বা ১৮ ফুট চওড়া এই রথ। শৈলেনবাবু জানালেন, ইসকন কর্তৃপক্ষ পুরীর রথের অনুকরণে রথ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দু’মাস ধরে ১৫ জন মিস্ত্রি মিলে সেই কাজে লেগে রয়েছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৫ ০১:৪৫
Share:

চলছে রথ তৈরির কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

হবিবপুরের রথকে আরও আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগী হল ইস্কন কর্তৃপক্ষ। এ বার পুরীর জগন্নাথদেবের রথের অনুকরণে তৈরি হচ্ছে তাদের রথ।
কোতোয়ালির দুর্গাপুরে শৈলেন দাস নামে এক কারিগরের বাড়িতে কাঠ, লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৩৭ ফুট উঁচু, ২৫ ফুট লম্বা ১৮ ফুট চওড়া এই রথ। শৈলেনবাবু জানালেন, ইসকন কর্তৃপক্ষ পুরীর রথের অনুকরণে রথ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দু’মাস ধরে ১৫ জন মিস্ত্রি মিলে সেই কাজে লেগে রয়েছি।’’
রানাঘাট থানা এলাকার হবিবপুর ইসকনের রথযাত্রা এ বার ১৯ বছরে পড়বে। আগামী শনিবার বিকালে স্থানীয় রাধামাধব মন্দির থেকে রথে চেপে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রানাঘাট শহরের স্বাস্থোন্নতি ময়দানের কাছে মাসির বাড়িতে পৌঁছবে। যাত্রাপথে থাকবে শোভাযাত্রা। সেখানে হরিনাম সংকীর্তন ছাড়াও থাকবে ট্যাবলো, পুরানের কাহিনী নিয়ে তৈরি মাটির মডেল, নানা রকমের বাজনা, বিভিন্ন ব্যান্ডের গান। যাত্রাপথে দর্শকদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হবে বলে খবর।
স্বাস্থোন্নতি ময়দানে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুকরণে মাসির বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এখানে টানা ন’দিন নাটক, সঙ্গীত, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। তারপরে আগামী ২৬ জুলাই, রবিবার একই ভাবে শোভাযাত্রা সহযোগে রথ ফিরবে হবিবপুরের বাড়িতে। হবিবপুর গৌরধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ কীর্তনদাস মহারাজ জানান, মাসির বাড়িতে থাকার সময় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে বিভিন্ন পোশাক যেমন বৃন্দাবন বেশ, পদ্ম বেশ, পুষ্প বেশ ইত্যাদিতে সাজানো হবে। প্রতিদিন ৫৬ রকমের ভোগ দিয়ে পুজো দেওয়া হবে। কিন্তু পুরীর অনুকরণে রথ কেন? তিনি বলেন, ‘‘মানুষের কাছে এই রথকে আরও আকর্ষণীয় করতেই এই উদ্যোগ।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, মন্দির প্রতিষ্ঠার নেপথ্যের গল্প। ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদের মনে হয়েছিল, কলকাতা থেকে মায়াপুরের মাঝামাঝি একটা জায়গায় বিশ্রামের জন্য মন্দির তৈরি করা প্রয়োজন। তাঁর ইচ্ছার বাস্তব রূপ হবিবপুরে আজকের ইস্কনের শাখা মন্দিরটি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ১৯৯৭ সালে তৈরি হওয়া এই মন্দিরকে ঘিরে নানা পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছেন মন্দিরের অধিকর্তা শ্যামরূপ দাস ব্রক্ষচারী। তিনি জানান, থাকার জন্য অতিথি আবাস তৈরি হয়েছে। রয়েছে দাতব্য চিকিৎসালয়।

নানা সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতিতে ইসকনের রথযাত্রা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানাঘাট নাসড়াপাড়ার নৌসাদ আলি, চাকদহ বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের শিক্ষক রুহুল আমিন হক মণ্ডল, আইনজীবী শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় বা কবি দীনেশ চন্দ্র হাজারিরা জানালেন তাঁরা প্রতিবারই হবিবপুরের রথ দেখতে যান। জনকল্যাণ মূলক নানা কাজেরও প্রশংসা করেছেন তাঁরা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন