১৫ বছরেও আদালত হল না, ক্ষুব্ধ ডোমকল

মহকুমার বয়স ১৫। এখনও মহকুমা আদালত হয়নি ডোমকলে। আদালতের জন্য ১৫ বছরে প্রায় ১২ বার কখনও ভাড়াবাড়ি কখনও জমি দেখে গিয়েছেন বিভাগীয় কর্তারা। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মঙ্গলবার সেই একই উদ্দেশে জেলা জজ প্রসেনজিত্‌ বিশ্বাস ঘুরে দেখলেন ডোমকলের প্রশাসনিক ভবন লাগোয়া এলাকা। জানা গিয়েছে, একটি জমি চিহ্নিত হয়েছে। জমিটি বিভাগীয় হস্তান্তর হলে দ্রুত আদালতের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০৪
Share:

মহকুমার বয়স ১৫। এখনও মহকুমা আদালত হয়নি ডোমকলে। আদালতের জন্য ১৫ বছরে প্রায় ১২ বার কখনও ভাড়াবাড়ি কখনও জমি দেখে গিয়েছেন বিভাগীয় কর্তারা। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মঙ্গলবার সেই একই উদ্দেশে জেলা জজ প্রসেনজিত্‌ বিশ্বাস ঘুরে দেখলেন ডোমকলের প্রশাসনিক ভবন লাগোয়া এলাকা। জানা গিয়েছে, একটি জমি চিহ্নিত হয়েছে। জমিটি বিভাগীয় হস্তান্তর হলে দ্রুত আদালতের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

যদিও সেই আশ্বাসে মোটেই আশান্বিত নন ডোমকলের বাসিন্দারা। একযুগ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁদের আদালতের জন্য ছুটতে হয় বহরমপুর অথবা লালবাগ আদালতে। ডোমকলের আইনজীবী জাহাঙ্গির আলমের কথায়, “অন্য মহকুমার থেকে ডোমকলে আইনি জটিলতার মামলা অনেক বেশি। অথচ এই মহকুমায় আদালত নেই। আমাদেরও যথেষ্ট অসুবিধা হয়। মামলা নিয়ে দৌড়তে হয় বহরমপুর বা লালবাগে।”

এলাকার দুঃস্থ মানুষদের অসুবিধাটা সবচেয়ে বেশি। যাতায়াত করতে যা খরচ হয়, তাতে মামলা লড়ার সাধ্য থাকে না। ডোমকলের বাসিন্দা মকলেসুর রহমানের কথায়, “ছাগল-মুরগি নিয়ে বিবাদ বা জমির বেড়া দেওয়া নিয়ে শরিকি গণ্ডগোলতুচ্ছ সব বিষয় নিয়ে ডোমকলের মানুষকে অত দূর যেতে হয়।”

Advertisement

শুধু সাধারণ মানুষ নয়। বিপাকে পড়তে হয় প্রশাসনকেও। ছোটখাটো আইনি কাজে আসামীদের নিয়ে পুলিশকে দৌড়তে হয় লালবাগ, বহরমপুরে। পুলিশ জানাচ্ছে, জলঙ্গি এবং রানিনগর মহকুমা থেকে আদালতের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিমি। ফলে প্রচুর সময় নষ্ট হয়ে যায় শুধুমাত্র আদালতে যাতায়াত করতে। ডোমকলের এসডিপিও অরিজিত্‌ সিংহ বলেন, ‘‘দূরত্বের জন্য সময় নষ্ট তো হচ্ছেই। তার উপরে আবার মহকুমার চারটি থানার দু’টি বহরমপুর আদালতে ও বাকি দু’টি লালবাগ আদালতে পড়ে বলে আলাদা গাড়ি লাগে। এর জন্য অতিরিক্ত পুলিশেরও প্রয়োজন হয়। ডোমকলে আদালত হলে পরোক্ষ ভাবে সরকারের বড় একটা খরচ বাঁচবে যাতায়াত বাবদ। তাছাড়া দীর্ঘ পথে আসামীদের নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমবে।’’

বিভিন্ন মহলে বারবার দরবার করেও কাজ না হওয়ায় আদালত চেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ডোমকলের মানুষ। জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে দায়ের করা ওই মামলার অবশ্য এখনও কিনারা হয়নি। তবে, কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার জেলা জজের সঙ্গে জমি পরিদর্শনে ছিলেন মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দিব্যেন্দু গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘একটি মহকুমা হলে তার সঙ্গে একটি মহকুমা আদালতও নিয়মমাফিক হওয়া উচিত। কেন বিষয়টি এতদিন ঝুলে আছে আমার জানা নেই। আমরা প্রশাসনিক ভাবে চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত আদালত তৈরি হয়। জমি চিহ্নিত হয়েছে। বিভাগীয় হস্তান্তর হলেই আশা করছি দ্রুত আদালতের কাজ শুরু হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement