বাম আমলেই শুরু হয়েছিল রাজ্যের নাম বদলের উদ্যোগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বেশি দূর গড়ায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্ষমতায় আসার পর চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলাতে। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক, বিষয়টা ধামাচাপাই ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়াতেই হঠাত্ নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়াটা গড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গ নাম বদলে ফেলার প্রস্তাব আজ, মঙ্গলবার, পাস হয়ে গেল রাজ্য মন্ত্রিসভায়। কী হবে রাজ্যের নতুন নাম? বাংলা ভাষায় নাম হবে ‘বাংলা’ বা ‘বঙ্গ’, আর ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’- এটাই চাইছে রাজ্য সরকার।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ দিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, “মন্ত্রিসভায় রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এই বিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেও আলোচনা করা হবে।” নিয়ম অনুযায়ী এর পর সরকার পক্ষকে নাম পরিবর্তনের বিল পেশ করতে হবে বিধানসভায়। বিধানসভায় পাস হলে, তা চলে যাবে সংসদে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। কেননা কোনও রাজ্যের সীমানা বা নাম পরিবর্তন করার অধিকার রয়েছে কেন্দ্রীয় আইনসভারই।
অনেক দিন ধরে ভাবনায় থাকা এই নামবদল নিয়ে আচমকা এই উদ্যোগ কেন? তৃণমূলের ভিতরের খবর, এর পিছনে রয়েছে দিল্লিতে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক। প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ওই বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর প্রতিনিধি। বরাবরই এই ধরনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের ডাক পড়ে একদম শেষে। কারণ ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী রাজ্যগুলোর নাম ধরে ধরে বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এ রাজ্যের ইংরেজি নাম ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শুরু ডব্লিই অক্ষরদিয়ে। ফলে ডাক আসে একদম শেষে। একে দীর্ঘ অপেক্ষা, তার উপর প্রথম দিকের বক্তারা বেশি সময় নিয়ে ফেলায় শেষের বক্তাদের নির্ধারিত সময় কমে যায়। তা ছাড়া শেষ দিকে অনেকটা শিথিলও হয়ে আসে সভার মনোভাব। এ বারও সেটাই ঘটেছিল। নিজের পুরো বক্তব্য বলার মতো যথেষ্ট সময় পাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরই কলকাতায় ফিরে এই নাম বদলের দ্রুত উদ্যোগ।
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু অনুষ্ঠানে মমতার চাঁদমারি বিজেপিই