গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
এসআইআরের শুনানি-পর্ব শুরুর আগে রাজ্যের বিশেষ রোল-পর্যবেক্ষকের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আজ, সোমবার বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে দিল্লির নির্বাচন সদনে। সূত্রের মতে, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার এবং বাকি দুই নির্বাচন কমিশনারও ওই বৈঠকে থাকবেন।
এসআইআর (বিশেষ নিবিড় সংশোধন) শুরুর প্রায় ২৪ দিনের মাথায় বিশেষ রোল-পর্যবেক্ষক হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার সুব্রত গুপ্তকে নিয়োগ করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের নানা প্রান্তে এসআইআরের তথ্য নথিবদ্ধ করার কাজে তখন নানা অভিযোগ উঠছে। এমনকি, বিজেপি সরাসরি ভোট-কৌশলী সংস্থা আই-প্যাকের নামে সরব হয়। ওই সংস্থার মাধ্যমে বিএলওদের ডেটা-এন্ট্রি বা তথ্য অন্তর্ভুক্তিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগও কার্যত তোলে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে সুব্রত-সহ আরও ১২ জন পর্যবেক্ষককে নিয়োগ করে কমিশন। যাঁরা জেলায় জেলায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। এতে কিছু ত্রুটি ধরা সম্ভব হচ্ছে বলেও কমিশন সূত্রের দাবি। পাশাপাশি, আপলোড হওয়া তথ্য ‘রোল-ব্যাক’ বা ফিরিয়ে নিয়ে সংশোধনের ‘সুযোগ’ বিএলও-দেরও দিয়েছে কমিশন। লিখিত ভাবে তারা জানিয়েছে, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পরে ইচ্ছাকৃত ত্রুটি ধরা পড়লে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তাদের একাংশের অনুমান, যতটা ধরা গিয়েছে এত দিনে, বা আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যতটা ধরা যাবে, তার তুলনায় ত্রুটির বহর বেশি হতে পারে। এই অবস্থায় এসআইআরের দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ, শুনানি-পর্যায়ের গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে। এই পর্বের নজরদারি নিয়েই বিশেষ পর্যবেক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে কমিশনের ‘ফুল বেঞ্চ’। আবার তথ্য অন্তর্ভুক্তি পর্বে পর্যবেক্ষকদের অভিজ্ঞতা, মতামত শুনতে চাইতে পারেন কমিশন-কর্তারা।
ক্যামেরার সামনে শুনানি করার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই নিয়েছে কমিশন। সব শুনানি কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সরাসরি সম্প্রচারের পাশাপাশি রেকর্ডও করা হবে। এমনকি, মাইক্রো-অবজ়ার্ভারদের নজরদারি নিয়ে ওঠা প্রস্তাবও কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে। আধিকারিকদের অনুমান, বিশেষ কিছু এলাকার উপরে পৃথক নজরদারি রাখতে পারে কমিশন। যে এলাকাগুলিতে স্বাভাবিক জন্মহারের তুলনায় ভোটার সংখ্যা বা নতুন ভোটারের আবেদন বেশি, কিংবা রাজনৈতিক ভাবে যে এলাকাগুলি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে অভিযোগের ছড়াছড়ি— তা নজরে রাখা হতে পারে। আবার ১২ জন পর্যবেক্ষকের জেলায় জেলায় ঘুরে জনসাধারণ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথার অভিজ্ঞতার রিপোর্ট নিয়েও দিল্লির বৈঠকে চর্চা হতে পারে। সব মিলিয়ে শুনানি পর্বটি নিশ্ছিদ্র এবং মসৃণ রাখার পদক্ষেপ করছে নির্বাচন সদন। ক্ষেত্র বিশেষে শুনানির জন্য পৃথক কৌশল এবং প্রশ্নমালা তৈরিও হতে পারে।
১১ ডিসেম্বর শেষ হবে এসআইআরের এনুমারেশন পর্ব। ওই দিনের মধ্যেই ভোটকেন্দ্র বা বুথ পুনর্বিন্যাসের পরিকল্পনা সারার কথা। ইতিমধ্যেই আবাসন বা বহুতলগুলিতে ভোটকেন্দ্র তৈরির ব্যাপারে আপত্তি তুলেছেন রাজ্যেরশাসক দল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠিও পাঠিয়েছেন মমতা। তা এখনও কমিশনের বিবেচনায় আসেনি। এই বিষয়গুলিতে কমিশন কী করবে, তারও ইঙ্গিত থাকতেপারে বৈঠকে।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে