রাজ্যে বাজির শব্দমাত্রা নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশকেই কার্যত স্বীকৃতি দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত।
মঙ্গলবার কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্যে বাজির শব্দমাত্রা কেন ৯০ ডেসিবেল থাকবে, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে পর্ষদকে। এর জন্য ৬ মাসের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। সেই ব্যাখ্যা নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে, মামলাটি তখন ফের পরিবেশ আদালতে আসতে পারে।
সারা দেশে বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল। কিন্তু এ রাজ্যে তা ৯০ ডেসিবেল। ফলে দীপাবলি-সহ নানা অনুষ্ঠানে দেশ জুড়ে যে ধরনের শব্দবাজি ফাটানো হয়, আইনি কারণেই সেগুলি এ রাজ্যে ফাটানো যায় না। ডেসিবেলের কড়াকড়িতে মাইক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রাশ টানা হয়। তাই এই শব্দমাত্রা বাড়ানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মামলা চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। পরিবেশ আদালত গঠিত হওয়ার পরে মামলাটি সেখানে স্থানান্তরিত হয়।
মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, সারা দেশে ১২৫ ডেসিবেল শব্দমাত্রা থাকলেও এ রাজ্যে কেন তার থেকে কম শব্দমাত্রা লাগু করা হবে? পর্ষদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী এ দিন জানান, শব্দমাত্রা বাড়ানোর ব্যাপারে পরিবেশ আদালতে যে আর্জি জানানো হয়েছে, তা এ দিন আমলই পায়নি বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে।
অবশ্য আইন থাকলেও রাজ্যে তালঙ্ঘনের উদাহরণও রয়েছে। বিশেষত কালীপুজোর রাতে বহু এলাকাতেই কান পাতা দায় হয়ে ওঠে। এমনকী শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করে এ রাজ্যই প্রথম শহিদ হতে দেখেছিল এক যুবককে। সেই মৃত্যু নিয়েই মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ১৯৯৭ সালে কলকাতা হাইকোর্ট এই শব্দমাত্রা বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
যাঁর হাত ধরে এ রাজ্যে শব্দ আইন রূপ পেয়েছিল, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সেই প্রাক্তন মুখ্য আইনি অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন,প্রথমে এই মাত্রা ৬৫ ডেসিবেল করা হয়েছিল। পরে সেটিকে বাড়িয়ে ৯০ ডেসিবেল করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একটি সুপারিশ মেনেই এটা হয়েছে। অন্যথায় দীপাবলির রাতে সব বাজি এক সঙ্গে ফাটতে শুরু করলে শব্দমাত্রা অনেক উপরে উঠে যাবে। দীপাবলি আলোর উৎসব, শব্দের নয়— এটাই আমরা বোঝাতে চেয়েছিলাম।’’