ধসে বিপর্যস্ত দার্জিলিঙের বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: পিটিআই।
কেন এত ধস নামছে দার্জিলিঙে? একটুতেই এত বড় মাপের বিপর্যয় কেন হচ্ছে বার বার? হিমালয় সংলগ্ন এই জেলার পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল জাতীয় পরিবেশ আদালত (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল)। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় জ়োনাল বেঞ্চে বিষয়টি শোনা হবে।
কিছু দিন আগে এক রাতের প্রবল বর্ষণে ভেসে গিয়েছিল দার্জিলিং। ধস নেমে জাতীয় সড়কের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যার ফলে সিকিম কিংবা মিরিকের দিকে যাওয়ার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হয়। শুধু জাতীয় সড়ক নয়, গোটা দার্জিলিং জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অনেক রাস্তায় ধস নেমেছিল। তা নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। তাদের বক্তব্য, দার্জিলিঙে পরিবেশের মারাত্মক অবক্ষয় হয়েছে। কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল, কেন্দ্র এবং রাজ্যকে তার লিখিত জবাব দিতে হবে।
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, দার্জিলিঙে যে হারে অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের কাজ চলছে, তাতে পরিবেশের প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। রাজ্য এবং জাতীয় সড়কগুলিতে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। তা ছাড়া, বৃষ্টিপাতের ধরনেও বদল এসেছে। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর রিপোর্ট তুলে ধরে জানানো হয়েছে, দার্জিলিং বিশ্বের ১৪৭তম ভূমিধসপ্রবণ এলাকা। ২৮ অক্টোবরের নির্দেশে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারম্যান প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং এক বিশেষজ্ঞ সদস্যের বেঞ্চ দার্জিলিঙের অবস্থান উল্লেখ করে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বকে তুলে ধরেছে। বলা হয়েছে, ‘‘দার্জিলিং চিকেন্স নেক করিডরের কাছে অবস্থিত। তাই জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। পূর্ব হিমালয়ের জলবায়ু এবং দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনায় তাই জাতীয় স্তরের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’’
দার্জিলিঙে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ আইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রক, পশ্চিমবঙ্গের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, জিবি পন্থ ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান এনভায়রনমেন্ট, ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিয়োলজি এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতে দার্জিলিঙের পরিস্থিতি সম্পর্কে লিখিত রিপোর্ট তাদের জমা দিতে হবে।