Mamata Banerjee on SIR

ভয় পাবেন না, হঠকারী কিছু করবেন না! ‘এসআইআরের শঙ্কা’য় পর পর মৃত্যুর মধ্যেই আশ্বাসবাণী মুখ্যমন্ত্রী মমতার

বাংলায় এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পরের ৭২ ঘণ্টায় পর পর তিনটি ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। বৃহস্পতিবার সেই তিন ঘটনার উল্লেখ করেই বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গী দলগুলিকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৩০
Share:

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির পর কোচবিহারের দিনহাটা এবং বীরভূমের ইলামবাজার। রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) ঘোষণা হওয়ার পরের ৭২ ঘণ্টায় পর পর তিনটি ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। বৃহস্পতিবার সেই তিন ঘটনার উল্লেখ করেই বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গী দলগুলিকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন। জানালেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের অধিকারের দাবিতে তিনি লড়াই করবেন।

Advertisement

গত সোমবার রাজ্যে এসআইআর ঘোষণা করা হয়েছে। দাবি, সে রাতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন খড়দহের পানিহাটির বাসিন্দা ৫৭ বছরের প্রদীপ কর। পুলিশ তাঁর ঘর থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করে, যাতে লেখা ছিল, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী।’’ এর ঠিক পরের দিন দিনহাটার বাসিন্দা ৬৩ বছরের খইরুল শেখ বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নামের বানান ভুল ছিল বলে এসআইআর নিয়ে তিনি আতঙ্কে ছিলেন বলে পরিবারের দাবি। বৃদ্ধ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর পর বৃহস্পতিবার ইলামবাজার থেকে এক বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর আসে। ৯৫ বছর বয়সি ক্ষিতীশ মজুমদার ২০০২ সালের তালিকায় নিজের নাম খুঁজে পাননি। এসআইআর-এর ভয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি। এই তিন ঘটনার উল্লেখ করে মমতা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘বিজেপির ভয়, ঘৃণা এবং বিভাজনের রাজনীতির করুণ পরিণতির সাক্ষী থাকছি আমরা। বাংলায় এসআইআর ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একের পর এক ট্র্যাজেডি ঘটছে, যা অনায়াসে এড়ানো যেত। এর জন্য দায়ী কে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি এর দায় নেবেন? বিজেপি আর তাদের জোটসঙ্গীরা, যাদের তত্ত্বাবধানে এই ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাদের কি কিছু বলার সাহস আছে?’’

ইলামবাজারে বৃদ্ধের মৃত্যুকে ‘মানবতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বাংলায় বাস করছেন। এখন তাঁদের জন্মভূমি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে! এটা নিষ্ঠুর এবং অযৌক্তিক। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে মমতা লিখেছেন, ‘‘প্রত্যেক নাগরিককে বলছি, বিশ্বাস হারাবেন না। কোনও চূড়ান্ত পদক্ষেপ করবেন না। আমাদের সরকার আপনার পাশে আছে। আমরা বাংলায় এনআরসি হতে দেব না। সামনের দরজা দিয়েও নয়, পিছনের দরজা দিয়েও নয়। এক জন বৈধ নাগরিককেও আমরা ‘বহিরাগত’ তকমা পেতে দেব না। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করব। বিজেপি আর তার জোটসঙ্গীদের উদ্দেশ্যকে সফল হতে দেব না।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের পাল্টা দাবি, এসআইআর হলে বৈধ ভোটারদের নাম কোনও ভাবেই বাদ পড়বে না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অযথা আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে তিনটি ঘটনা নিয়ে ফের মুখ খুললেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement