পোস্তা বাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: ফেসবুক।
দেশের সকল ‘প্রকৃত’ ভোটার ভাল থাকুক। তিনি ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ চান না। বুধবার পোস্তা বাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণতন্ত্র এবং অধিকারের কথা শোনা গেল তাঁর মুখে। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) শুরু হয়েছে। তার পরের দিন ভোটারদের অধিকার নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। যদিও তিনি এসআইআর নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি।
জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমরা সকল উৎসবই পালন করি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমি আর কিছু চাই না। আমাদের দেশ ভাল থাক। বাংলা ভাল থাক। মানুষ ভাল থাক। আমি ডিভাইড অ্যান্ড রুল চাই না।’’ এর পরেই ভোটারদের অধিকার সম্বন্ধে তিনি বলেন, ‘‘সব প্রকৃত ভোটার ভাল থাকুন। গণতন্ত্রের পিলারকে মজবুত রাখতে হবে। প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে। সকলে যেন নিজ নিজ অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।’’ দেশের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে গান্ধীজি, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম, সর্দার বল্লভভাই পটেল প্রমুখের নাম করেছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, সকলকে একজোট হয়ে থাকতে হবে। তবেই ‘শক্ত করা যাবে মুঠি’। তিনি বলেন, ‘‘মানবিকতা, মনুষ্যত্ব সবচেয়ে বড় ধর্ম। পাঁচটা আঙুল একসঙ্গে আছে বলেই আমাদের মুঠি শক্ত হচ্ছে। সাদা-কালো, ভাল-খারাপ, ছোট-বড় তো সর্বত্র থাকে। বজ্রমুষ্ঠি আলাদা করা চলবে না। রামকৃষ্ণ দেব, স্বামী বিবেকানন্দ, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণও এ কথা বলেছেন।’’
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিহারের মতো এ রাজ্যেও এসআইআর বা ভোটার তালিকার সংশোধনের প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সোমবার তা ঘোষণা করার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতি সরগরম। পানিহাটিতে ‘এনআরসি আতঙ্কে’ আত্মহত্যা করেছেন এক প্রৌঢ়। ‘সুইসাইড নোটে’ তেমনটাই লেখা ছিল বলে পুলিশের দাবি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেছেন। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। বিজেপির পাল্টা দাবি, অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ যাবে এসআইআর হলে। কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অকারণে মানুষের মনে ভয়ের সঞ্চার করার অভিযোগ তুলেছে তারা। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর মুখেও ভোটারদের অধিকারের কথা শোনা গেল।