সম্মানহানি যন্ত্রণার, অন্য লড়াইয়ে নয়না

স্বামীর গ্রেফতারের খরবটা পেয়েই ছুটেছিলেন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। রাত সওয়া ৮টায় সেখান থেকে বেরিয়ে যখন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেন তখন মাথায় একটাই চিন্তা। মানুষটা অসুস্থ। প্রচুর ওষুধ খেতে হয়।

Advertisement

প্রসূন আচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

সিজিও কমপ্লেক্সে নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শৌভিক দে।

স্বামীর গ্রেফতারের খরবটা পেয়েই ছুটেছিলেন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। রাত সওয়া ৮টায় সেখান থেকে বেরিয়ে যখন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেন তখন মাথায় একটাই চিন্তা। মানুষটা অসুস্থ। প্রচুর ওষুধ খেতে হয়। এই ধাক্কাটা কী ভাবে সামলাবেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়! নয়নার কথায়, ‘‘ওঁর ওষুধপত্র, জামাকাপড় সবই তো বাড়িতে। সে সব তো নিতে হবে! নিয়ম করে ঘড়ি ধরে ওষুধ খেতে হয়। কী যে হবে!’’ নয়না কথা বলেছেন আইনজীবীদের সঙ্গে। সুদীপবাবুকে কখন কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, তা কেন ঠিক মতো তাঁদের জানানো হচ্ছে না, তার জন্য থানায় পাল্টা এফআইআর-ও দায়ের করেছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তিনি রওনা দিচ্ছেন ভুবনেশ্বরে।

Advertisement

সিবিআই তাপস পালকে গ্রেফতারের পর তাঁর সঙ্গে একই বিমানে ভুবনেশ্বরে যান তাপসের স্ত্রী নন্দিনীও। নয়নাও মনকে শক্ত রাখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁর সঙ্গে থেকে অনেক কঠিন সময় দেখেছি। কিন্তু এ অন্য রকম। বুঝতে পারছি, আমাকে শক্ত থাকতে হবে।’’ সিবিআই দফতরে সুদীপবাবুর সঙ্গে নয়নার কথা হয়েছে। নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে সুদীপ নয়নাকে আশ্বাস দিয়েছেন, রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই চিন্তার কিছু নেই।

এক যুগ আগের লোকসভা ভোটে যখন তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের সমর্থনে জোড়া মোমবাতি চিহ্নে দাঁড়িয়েছিলেন সুদীপবাবু, তখন কঠিন রাজনৈতিক-যুদ্ধে নয়না তাঁর পাশে ছিলেন। গত বছর সুদীপবাবু অসুস্থ হয়ে যখন দিল্লির হাসপাতালে জীবন-যুদ্ধে লড়ছেন, তখনও নয়না তাঁর পাশে। কিন্তু এ বার গ্রেফতারের পরে সুদীপবাবুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে যে ধরনের ‘সম্মানহানি’ হল, তা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি বলে জানাচ্ছেন নয়না। তাঁর কথায়, ‘‘ও বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ে তো কিছু বুঝতেই পারিনি। ভেবেছিলাম যখন সিবিআই অফিসে ডেকেছে, কথা বলে
চলে আসবে। কী করে বুঝব, ওরা গ্রেফতার করবে!’’

Advertisement

সাংসদ-বিধায়ক স্বামী-স্ত্রীকে এমনিতে কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এখন নয়না বুঝতে পারছেন, দিদি থেকে শুরু করে তৃণমূল দল সুদীপবাবুর পাশে থাকলেও এই লড়াইয়ে তাঁকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। মানসিক ভাবে যাতে সুদীপবাবু ভেঙে না পড়েন, তার জন্য পাশে থাকতে হবে। বর্ষীয়ান সাংসদের সুস্থতারও খেয়াল রাখতে হবে।

সিনেমা এবং বাস্তব জীবনে নানা চড়াই-উতরাই দেখে আসা এক কন্যার সামনে এখন সত্যিই অন্য রকম লড়াই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন