পুরসভার বাস ফিরিয়ে নিল এনবিএসটিসি

যে বাসটি সেতু থেকে পড়েছিল, সেটি অবশ্য এখন বহরমপুর থানায়। বৃহস্পতিবার সেটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়। নদিয়ার করিমপুর থেকে বহরমপুর হয়ে মালদহে যাতায়াত করত সেটি। মুর্শিদাবাদের শেখপাড়া থেকে কলকাতা যাতায়াত করত অন্য একটি বাস, সেটি পুরসভার কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৯
Share:

ভাণ্ডারদহ বিলে দুর্ঘটনার চার দিনের মাথায় বহরমপুর পুরসভাকে দেওয়া বাস ফিরিয়ে নিল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এনবিএসটিসি)। তারা নিজেরাই এ বার ওই রুটে বাস চালাবে।

Advertisement

যে বাসটি সেতু থেকে পড়েছিল, সেটি অবশ্য এখন বহরমপুর থানায়। বৃহস্পতিবার সেটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়। নদিয়ার করিমপুর থেকে বহরমপুর হয়ে মালদহে যাতায়াত করত সেটি। মুর্শিদাবাদের শেখপাড়া থেকে কলকাতা যাতায়াত করত অন্য একটি বাস, সেটি পুরসভার কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত বছর বহরমপুর পুরসভাকে বাস দু’টি দিয়েছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নিজেদের চালক না থাকায় তারা অন্য সংস্থাকে বাস চালানোর দায়িত্ব দেয়। কিন্তু সোমবার ওই দুর্ঘটনার পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অবশ্য অভিযোগ করেন, লজঝড়ে বাসে রং চাপিয়ে নতুন বলে চালানো হয়েছিল। লাশের সঙ্গে বাসেরও ময়নাতদন্ত দাবি করেন তিনি।

Advertisement

শুভেন্দু অবশ্য এ কথার কোনও জবাব দিতে চাননি। এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী কিন্তু দাবি করেন, ‘‘দু’টি নতুন বাসই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুরসভা আমাদের না জানিয়ে একটি সংস্থাকে ফ্র্যাঞ্চাইজি দেয়। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুরসভার কাছ থেকে বাস ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই দু’টি রুটে এ বার থেকে আমরাই বাস চালাব।’’

তিন দিন নিখোঁজ থাকার পরে এ দিন বিল থেকে ডোমকলের হাজি আব্দুল মালেকের (৬২) দেহ মেলে। অন্য একটি বেসরকারি বাসে চেপেও বসার জায়গা না পেয়ে তিনি সরকারি বাসটিতে গিয়ে উঠেছিলেন। এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪-এ। আর কারও নিখোঁজ থাকার খবর এখনও নেই। তবে তল্লাশি চলছে। বাসটির হেল্পার দুর্ঘটনার পরেই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন। পরের দিন তিনি নিজেই এসে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ দিন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।

পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, বছরে ৩০টি উপরে দুর্ঘটনা ঘটেছে এমন থানার সংখ্যা জেলায় ন’টি। বুধবারই সেগুলির ওসি-দের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহেই এমন বৈঠক হবে বলে তাঁর দাবি। প্রশ্ন হল, পুরসভার মতো সংস্থাই যখন যাকে-তাকে বাস চালাতে দেয়, তখন শুধু পাহারা বাড়িয়ে কি দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে?

বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তবে পুরসভার তরফে বাস চালানোর দায়িত্বে থাকা প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “নিয়ম মেনে চুক্তি করে বাস চালাতে দেওয়া হয়েছিল।” দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ‘বঙ্গ ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেলস’-র অন্যতম কর্তা বাবলু মণ্ডলও একই দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন