প্রস্তাবিত করিডরের নকশা। —নিজস্ব চিত্র।
চার লেনের কোনা এক্সপ্রেসওয়ের মাথার উপরে ছ’লেনের এলিভেটেড করিডর! যানজটের হাত থেকে রেহাই পেতে এমনই এক অভিনব প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। যেহেতু ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে হিসাবে পরিচিত, তাই কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের সঙ্গে এই নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা সেরে নিয়েছেন পূর্ত দফতরের কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী চান, প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হোক। পূর্ত কর্তারা জানান, কাজ শুরু হলে শেষ করতে ৩৬ মাস লাগবে।
দিল্লি ও মুম্বই রোড ধরে এলে কলকাতার প্রবেশ পথ কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। প্রতি দিন এই রাস্তায় প্রায় ২০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। বেশির ভাগই ভারি কন্টেনার, যা গার্ডেনরিচ বন্দরে যায়। পূর্ত কর্তারা জানান এই জাতীয় সড়কটি আদতে চার লেনের হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। রাস্তার উপরে সাঁতরাগাছি সেতুর অবস্থাও বেহাল। তাই রাস্তা থেকে ৮-২০ মিটার উঁচুতে ছ’লেনের এলিভেটেড করিডর তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত করিডরের নকশা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘রাইটস’-এর হাইওয়ে বিভাগকে। তারা ৬০০ পাতার নকশা তৈরি করে রাজ্যের হাতে তুলে দেয়। এই নিয়ে পূর্ত দফতর, রাইটসের ইঞ্জিনিয়ার এবং রেল ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা বৈঠক করেন। সেখানে নকশা চূড়ান্ত হয়। ইঞ্জিনিয়ারদের আশা, ফেব্রুয়ারির মধ্যে টেন্ডার ডেকে সেতুর কাজ শুরু হবে।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, নবান্নের ঠিক পিছন থেকে শুরু হয়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে নতুন এলিভেটেড করিডর নিবরায় গিয়ে দিল্লি রোডে মিশবে। করিডর হবে প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। প্রাথমিক ভাবে এর খরচ ধরা হয়েছিল এক হাজার কোটি টাকা। তা বাড়তেও পারে বলে মনে করেন পূর্ত কর্তারা।
পূর্ত দফতর ও রাইটসের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ জানান, বর্তমান কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধার দিয়ে পিলার তুলে এলিভেটেড করিডর তৈরি হবে। ফলে নিচের রাস্তা দিয়ে যেমন গাড়ি চলাচল করবে, তেমন উপরের ছ’লেনের করিডর দিয়েও গাড়ি চলবে। করিডরের মাঝে মাঝে ‘র্যাম্প’ থাকবে নামার জন্য। এক কর্তা জানান, এই রাস্তা জাতীয় সড়ক হওয়ায় পুরো টাকাটাই কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা। এই করিডরের সঙ্গে সাঁতরাগাছি স্টেশনে যাওয়ার রাস্তা যুক্ত হচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষ সাঁতরাগাছি স্টেশনের সামনে সেই কাজ শুরুও করেছেন।
রাইটসের এক কর্তা জানান, স্টেশন থেকে গাড়ি নিয়ে সরাসরি করিডরে ওঠার জন্য পৃথক রিং রোড হবে। রেলের জমিতে কাজ হবে। ফলে জমি অধিগ্রহণ করা বা কেনার প্রয়োজন নেই।