রাজ্যে আরটিএ বা তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেও জবাব মেলে না বলে অভিযোগ আছে ভূরি ভূরি। এই অবস্থায় স্কুল স্তরে যাতে যাবতীয় তথ্য চটজলদি পাওয়া যায়, তার জন্য রাজ্যের সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলগুলিতে চালু হচ্ছে স্কুল ইনফর্মেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এসএমএস)। ‘শিক্ষাসাথী’ নামে এই প্রকল্পে স্কুলের যাবতীয় তথ্য থাকবে কেন্দ্রীয় পোর্টালে। এই সিস্টেমে সড়গড় হয়ে উঠতে জেলায় জেলায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এসএমএস পোর্টালে স্কুলের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সকলের তথ্যই থাকবে। প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনে সব সহশিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, ছাত্র, এমনকি ইচ্ছুক অভিভাবকদেরও ওই পোর্টালে ঢোকার অনুমতি দিতে পারবেন। প্রত্যেক পড়ুয়ার মাসিক উপস্থিতি ও পরীক্ষার ফলাফল আপলোড করতে হবে ওই পোর্টালে। তা ছাড়া আইডেন্টিটি কার্ড, প্রোগ্রেস রিপোর্ট, ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ওই পোর্টাল থেকে পেয়ে যাবে ছাত্রছাত্রীরা।
কলকাতা জেলার সদ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষক জানান, মিড-ডে মিলের তথ্য, বিভিন্ন মেধাবৃত্তির সুলুকসন্ধান থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোন দিন কোন অধ্যায় পড়াবেন, সব কিছুই ওই পোর্টালে নথিভুক্ত হবে। তবে প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকাদের একক ভাবে এই সব কাজ করতে হলে সেটা তাঁদের পক্ষে খুবই চাপের হবে বলে শিক্ষা শিবিরের অভিমত। কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের বক্তব্য, ওই পোর্টালে পঠানপাঠনের অনেক তথ্য আপলোড করতে হবে। বিষয়টি ত্রুটিমুক্ত করা স্কুলের প্রধানের একার পক্ষে সম্ভব নয়। গত বছর মার্চে প্রকাশিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যে-সব স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক আছেন, সেগুলিতে পঠনপাঠন সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারি ও পরিচালনার কাজের দায়িত্ব তাঁদেরও। কিন্তু পোর্টাল সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে তাঁদের বাদ রাখা হয়েছে।
‘‘তবে এই সিস্টেমের সূচনা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর যথাযথ প্রয়োগে স্কুলশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সকলেই উপকৃত হবেন,’’ বলেন সৌদীপ্তবাবু। তাঁর মতে, যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য আপলোড করা হয়, তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি।