ঝাড়গ্রামের চোখে নয়া শিক্ষার স্বপ্ন

নতুন জেলা ঝাড়গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের মাঠে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, জঙ্গলমহলের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঝাড়গ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১৬
Share:

প্রণাম: ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নতুন জেলা ঝাড়গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের মাঠে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, জঙ্গলমহলের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঝাড়গ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা রূপায়ণে সময় লাগতে পারে। সে জন্য চিন্তাভাবনা চলছে, যাতে প্রাথমিক ভাবে ঝাড়গ্রামে অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস গড়ে পরবর্তীকালে সেটিকে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা যায়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ না হলেও পরবর্তী পর্যায়ে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। মুখ্যসচিবকে বিষয়টি দেখে রাখতে বলব যাতে নতুন ঝাড়গ্রাম জেলায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় উপহার দিতে পারি।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রথমে শান্তিনিকেতনে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় হবে। দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি ঝাড়গ্রামে হবে।

Advertisement

গত ছ’বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম জেলা এলাকায় স্নাতকস্তরের একটি মহিলা কলেজ-সহ চারটি নতুন সরকারি কলেজ চালু হয়েছে। বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জেলায় কলেজের সংখ্যা ১০টি। কিন্তু একমাত্র ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ ছাড়া আর কোনও কলেজে স্নাতকোত্তর স্তর নেই। বাম আমলে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে কেবলমাত্র বাংলা, রসায়ন ও প্রাণিবিদ্যা এই তিনটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে সীমিত আসনে পড়ানো শুরু হয়।

আরও পড়ুন...
কাজ শেষের সময় বেঁধে দিলেন মমতা
সাইকেল মেলেনি, হতাশ পড়ুয়ারা

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে উচ্ছ্বসিত পড়ুয়া ও শিক্ষক মহল। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তথা কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী অনুরূপা ঘোষ বলেন, “প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নতুন জেলার প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়ারা জেলাতেই স্নাতকোত্তর শিক্ষার সুযোগ পাবেন।” মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরার কথায়, “ঝাড়গ্রাম এলাকার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এটা তো সুখবর বটেই।”

এ দিন সভামঞ্চে রামকৃষ্ণ মিশনকে ঝাড়গ্রাম একলব্য স্কুল সংলগ্ন পাঁচ একর জমি দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্বামী শুভকরানন্দের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আদিবাসী পড়ুয়াদের একলব্য স্কুলটি মিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। মিশন-কর্তৃপক্ষ যত্ন নিয়ে খুব ভাল কাজ করছেন।’’ মমতা জানান, মিশন কর্তৃপক্ষ জমি চেয়েছিলেন। রাজ্য সরকার ওই জমি দিচ্ছে। স্বামী শুভকরানন্দ বলেন, “ওই জমি পেলে এলাকার মানুষের সেবার জন্য মিশন অনেক পরিকল্পনা বাস্তবয়িত করতে পারবে।”

দেড়টা নাগাদ বক্তৃতা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। মাওবাদীদের নাম না করে জঙ্গলমহলের অতীত সন্ত্রাসের দিনগুলির সঙ্গে তাঁর সরকারের আমলের উন্নয়ন ও শান্তির তুলনা টানেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন জেলার জেলাশাসক আর অর্জুন এবং পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তার সঙ্গে জনতার পরিচয়ও করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন