পাশাপাশি: পরেশ অধিকারী ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
দলে যোগ দেওয়ার এক সপ্তাহও হয়নি। তার আগেই তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতির দায়িত্ব পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী।
শুক্রবার ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা পরেশবাবু কলকাতায় আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দেন। রবিবার মেখলিগঞ্জে ফিরে সভা করেন। পরেশবাবুকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও দলের অন্দরে জল্পনা ছিল। তাঁকে জেলা সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার ঘোষণায় বুধবার ওই সংক্রান্ত জল্পনার অবসান হল। এদিন দলের জেলা সভাপতির বাড়িতে তৃণমূলের নবগঠিত চার সদস্যের ওই কোর কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। তারপরেই দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে পরেশবাবুকে পাশে বসিয়ে নতুন দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি , নবগঠিত কোর কমিটির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন কোচবিহার জেলা কমিটির সহ সভাপতি হিসেবে পরেশ অধিকারীকে প্রথম পর্যায়ে নিয়োগ করার জন্য। সেইমত আমরা পরেশবাবুকে জেলার সহ সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করছি।” পরেশবাবু বলেন, “সহ সভাপতি হিসেবে দলকে আরও শক্তিশালী করা, এলাকায় সংগঠন বাড়ান আমার লক্ষ্য। সাম্প্রদায়িক শক্তি যাতে মাথাচাড়া যাতে দিতে না পারে সেটাও লক্ষ্য হবে।” মেখলিগঞ্জে ‘ সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার’ বার্তাও দিয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় দলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ রয়েছে। সেসব সামলে পরেশবাবু কতটা সফল হন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে অবশ্য প্রশ্ন রয়েইছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কোন বার্তা দেবেন কিনা তা নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে পরেশবাবু অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, বার্তা দেওয়ার কিছু নেই। যারা নিজেরা সাংগঠনিক অবস্থা বুঝে নেবে তাঁরা যোগাযোগ করে নেবেন।পুরান দলের অনেকে যোগাযোগ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিক বৈঠক চলার সময়ে রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ, শীতলখুচির বিধায়ক হিতেন বর্মন, দলের আরেক জেলা সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জলিলবাবু ছাড়া বাকি তিনজনই অবশ্য নবগঠিত কোর কমিটির সদস্য। জলিলবাবু দলের আগের কোর কমিটির সদস্য ছিলেন। দল সূত্রের খবর, দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুরান কমিটি ভেঙে চার সদস্যের ওই নতুন কোর কমিটি তৈরি করা হয়েছে। জলিল অবশ্য বলেন, “দলনেত্রীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। জেলার নতুন কোর কমিটিকে আমি সবাগত জানাচ্ছি।” পুরান কমিটিতে ছিলেন দলের কোচবিহারের সাংসদ সহ একাধিক বিধায়ক, শাখা সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। বর্তমান জেলা রাজনীতি সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় জেলা সভাপতি বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত। পার্থবাবু বলেন, “ আমি দলের নিষ্ঠাবান কর্মী। দলের সমস্ত সিদ্ধান্তের পাশে আছি।” বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন,“ আমি বাইরে আছি। বিশদে না জেনে মন্তব্য করবনা।” দলের অন্দরের খবর,জেলায়গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ন্ত্রণ করতে দলনেত্রী নতুন ছোট ওই কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন।