দিনে উধাও সদ্যোজাত, মিলল রাতে

শেষ পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজই ফিরিয়ে আনল পাঁচ দিনের শিশুকে। নইলে ওয়ার্ডের বাইরে নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। ওয়ার্ডের ভিতরে ছিলেন নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০৪:০২
Share:

শিশু-চুরি: এই মহিলার কাছ থেকেই উদ্ধার হয় নবজাতক।

শেষ পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজই ফিরিয়ে আনল পাঁচ দিনের শিশুকে। নইলে ওয়ার্ডের বাইরে নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। ওয়ার্ডের ভিতরে ছিলেন নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা। সকলের নাকের ডগা থেকেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল পাঁচ দিনের শিশুটি। সবুজ শাড়ি পরা এক মহিলার কোলে শিশুটিকে দিয়ে রক্তের রিপোর্ট নিতে গিয়েছিলেন মা। এসে দেখেন শিশু-সহ মহিলা উধাও।

Advertisement

হাসপাতালের সিসি়টিভি ফুটেজে সবুজ শাড়ি পরা ওই মহিলার ছবি ধরা পড়ে। কিছু পরেই তাঁকে দেখা যায় সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে। মেট্রোর ফুটেজে দেখা যায়, মহিলা মেট্রোতে ওঠেন দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে।
পার্ক স্ট্রিটে নামেন ১টা ৫ মিনিটে। কোলে একটি শিশু। তাঁর ঠিক পিছনেই এক যুবক।

ফুটেজটি বৈদ্যুতিন প্রচারমাধ্যমে দেখানো হয় সন্ধে থেকে। তার জেরেই শিশুটি উদ্ধার হয় বাগমারি এলাকার একটি বাড়ি থেকে। আটক করা হয় চিন্ময়ী বেজ নামে এক মহিলা ও তাঁর স্বামীকে।

Advertisement

বাগমারি রোডের বাসিন্দা সরস্বতী নস্কর (২৬) গত বৃহস্পতিবার মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন। শুক্রবার তিনি একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। ইডেন বিল্ডিং-এর তিন তলায় ১৭ নম্বর শয্যায় ভর্তি রয়েছেন তিনি। সরস্বতীর বক্তব্য, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সবুজ শাড়ি পরা এক মহিলা ওয়ার্ডে এসে তাঁকে বলেন, ‘তোমার বাচ্চাকে টিকা দিতে নিয়ে যাব।’ সরস্বতীকে নিয়েই শিশু সমেত তিন তলা থেকে দোতলায় নামেন তিনি। সরস্বতীর অভিযোগ, ‘‘দোতলায় এসে উনি বললেন, ‘এখানে ডাক্তার নেই।’ তাই আবার তিন তলায় যেতে হল। একটি কাচের ঘরের সামনে উনি আমাকে ব্লাড রিপোর্ট নিয়ে আসতে বললেন। আমার ছেলেটা ওঁর কোলেই ছিল। রিপোর্ট নিয়ে এসে দেখি কেউ নেই।’’ চিন্ময়ী একই এলাকার বাসিন্দা বলে সরস্বতীর সন্তান হওয়ার খবর পেয়ে চুরির ছক কষেন বলে পুলিশের সন্দেহ।

তখনও আসেনি সুখবর। হাসপাতালে শোকার্ত মা।ছবি: সুমন বল্লভ, রণজিৎ নন্দী

সন্ধের মুখে চিন্ময়ীকে মুরারিপুকুর তল্লাটে দেখেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ‘ছেলেধরা’ বলে চড়াও হন। বিষয়টি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর কানে তোলেন তাঁরা। পাড়ার লোককে চিন্ময়ী বলেন, এ দিনই তাঁর প্রসব হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন কী করে? পড়শিরা বিশ্বাস করেননি। মহিলার বাড়ি থেকে একটি সবুজ শাড়িও পেয়েছে পুলিশ। রাতে শিশুটিকে পৌঁছে দেওয়া হয় হাসপাতালে। হাসপাতালের সুপার শিখা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই শিশুটিই এদিন আমাদের হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়েছিল। শিশুটির মা-ও ছেলেকে চিনতে পেরেছেন।’’ কিন্তু আটক মহিলাও যেহেতু শিশুটিকে নিজের ছেলে বলে দাবি করেছেন, তাই নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে শিখাদেবী জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: বিশ্বাস করেই ঠকলেন মা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন