চার্জশিট পেশে দেরি সিআইডি-র, ভুগছে এনআইএ

শুধু এক দিনের এ-দিক ও-দিক। তার জেরে জাল নোট চক্রের এক সন্দেহভাজন চাঁইয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করলেও তাঁকে হাতে পাওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ এখন রীতিমতো সংশয়ে।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪০
Share:

অভিযুক্ত: জাল নোটের চক্রী আসাদুল্লা বিশ্বাস।

শুধু এক দিনের এ-দিক ও-দিক। তার জেরে জাল নোট চক্রের এক সন্দেহভাজন চাঁইয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করলেও তাঁকে হাতে পাওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ এখন রীতিমতো সংশয়ে।

Advertisement

অভিযুক্ত আসাদুল্লা বিশ্বাস মালদহের কালিয়াচকে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য ছিলেন। এখন বহিষ্কৃত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে ২৪ মার্চ এনআইএ তাঁর বিরুদ্ধে জাল নোটের একটি মামলা রুজু করেছে। তিনি এখন জেলে। কাল, মঙ্গলবার কলকাতার এনআইএ আদালতে আসাদুল্লাকে হাজির করানোর কথা। সেপ্টেম্বরে আসাদুল্লার বিরুদ্ধে জাল নোটেরই মামলা রুজু করে তদন্ত করছিল সিআইডি। কাল তারা ওই মামলার নথিপত্র এনআইএ-কে দেবে।

কিন্তু সিআইডি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই মামলার চার্জশিট পেশ করতে পারেনি, এক দিন দেরি করেছে বলে জানিয়ে জামিনে মুক্তি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন আসাদুল্লা। সেটি বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর আদালতে বিচারাধীন। ৪ এপ্রিল হাইকোর্টে মামলাটি ওঠে। এখন এই আবেদন নিয়েই জাঁতাকলে এনআইএ।

Advertisement

হাইকোর্টে এনআইএ-র কৌঁসুলি সঞ্জয় বর্ধন জানান, আসাদুল্লার বিরুদ্ধে সিআইডি মামলা রুজু করে গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর। এ বছর ২২ মার্চ মালদহের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তারা চার্জশিট পেশ করেছে। সিআইডি তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) মামলা রুজু করেছিল। এ ক্ষেত্রে মামলা দায়ের করার ১৮০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার কথা। সময়সীমার মধ্যে তা পেশ করতে না-পারলে অভিযুক্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন।

‘‘২১ মার্চ ছিল সেই ১৮০তম দিন। কিন্তু সিআইডি তারও ২৪ ঘণ্টা পরে, ১৮১তম দিনে আসাদুল্লার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে। এই এক দিন দেরির কথা বলেই হাইকোর্টে জামিনে মুক্তির আবেদন করেছেন অভিযুক্ত,’’ বলেন সঞ্জয়বাবু।

এনআইএ-র আর এক আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘চার্জশিট দাখিলে সিআইডি-র এক দিন দেরির জেরে আসাদুল্লা জামিনে মুক্তি পেয়ে গেলে আমাদের পক্ষে ওঁকে নিজেদের হেফাজতে পাওয়া কঠিন হবে। অথচ জাল নোট চক্রের খবর জানার জন্য ওঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা জরুরি।’’ সিআইডি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চার্জশিট দিলে আতান্তরে পড়তে হতো না, বক্তব্য এনআইএ-র।

ইউএপিএ-তে চার্জশিট দিতে গেলে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের সম্মতি প্রয়োজন হয়। ১৮১ দিন সময় নিলেও সিআইডি কিন্তু সেটা জোগাড় করে উঠতে পারেনি। সেই সম্মতি ছাড়াই চার্জশিট পেশ করে তারা আদালতে জানিয়েছে, পরে অতিরিক্ত চার্জশিটে ওই নথি দেওয়া হবে।

সিআইডি-র এক কর্তার বক্তব্য, ওই নথি ছাড়া চার্জশিট পেশ করতে চাইলে সেটা ১৮১ দিনের অনেক আগেই দেওয়া যেত। সে-ক্ষেত্রে সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকত না। যদিও ওই মামলায় সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার, ডিএসপি দেবজ্যোতি ভৌমিকের দাবি, ‘‘আমি তো জানি, ১৮০তম দিনেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন