দিন পেরোলেও গড়া হল না তদন্ত কমিটি

রবিবার ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসবের জন্য সুমনকল্যাণ পোড়ে নামে এক বিশেষজ্ঞের অধীনে ভর্তি করানো হয় পাত্রসায়রের বলরামপুর গ্রামের বুলা বারিককে (২৬)।

Advertisement

অভিজিৎ অধিকারী 

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৫
Share:

ক্ষোভ: প্রসূতি ওয়ার্ডের বাইরের করিডোরে। (ইনসেটে) মৃত সদ্যোজাতের বাবা সুশান্ত বারিক। —ফাইল চিত্র।

সদ্যোজাত শিশুকন্যা ও মায়ের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরে, মঙ্গলবারেও তদন্ত কমিটি গড়া হল না বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। এ দিন হাসপাতাল সুপারের পদত্যাগ দাবি করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।

Advertisement

রবিবার ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসবের জন্য সুমনকল্যাণ পোড়ে নামে এক বিশেষজ্ঞের অধীনে ভর্তি করানো হয় পাত্রসায়রের বলরামপুর গ্রামের বুলা বারিককে (২৬)। পরিবারের দাবি, সোমবার সকাল ৮টা থেকে প্রসব বেদনা ওঠার পরে, তাঁরা সুমনকল্যাণবাবুর সঙ্গে বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করতে পারেননি। তখন হাসপাতালের যে ডাক্তারকে বুলা বাইরে দেখাতেন তাঁকে ফোন করা হয়। তিনি বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার রয়েছেন। অথচ, নার্সদের ডাকতে বলা হলেও খবর পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ। সুমনকল্যাণবাবুর বক্তব্য, ‘‘যখন যে ডাক্তার হাসপাতালে থাকবেন, তিনিই রোগীকে দেখবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সোমবার বেলা ১০টা নাগাদ ওই রোগীকে দেখেছি। তখন, যা করার দরকার ছিল, করা হয়েছে।’’

পরিবারের দাবি, বুলাদেবীকে দেখতে সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ পৌঁছন ডাক্তার সুশান্ত রায়। তাঁর আগে কেউ আসেননি। কিছু পরে সদ্যোজাত ও বুলাদেবীর মৃত্যু হয়। ডাক্তার সুশান্ত রায়, নার্স ও আয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন বুলার পরিজনেরা। বিধি অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতিতে ‘কল বুক’ পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট রোগীর জন্য ডাক্তার আনার কথা ওয়ার্ডের নার্সদের। তা কি করা হয়েছিল?

Advertisement

সুপার সুব্রত রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এক বারই ওই ডাক্তারকে ডাকা হয়েছিল। তার আগে কেন ডাকা হয়নি, তা তদন্ত কমিটি দেখবে।’’ সোমবার সুশান্ত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিন তিনি দাবি করেন, ‘‘সোমবার সকাল ৭টা থেকে অন্য ওয়ার্ডে ছিলাম। পৌনে ১১টা নাগাদ ওই অন্তঃসত্ত্বার জন্য ফোন পাই। সঙ্গে সঙ্গে প্রসূতি বিভাগে যাই। দেশিশুটির গলায় নাড়ি জড়িয়ে গিয়েছিল। হৃদস্পন্দনও কম। সিজ়ার করার পরিস্থিতি ছিল না। বাচ্চার মৃত্যুর পরে, মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়।’’

বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী, যাঁরা সে দিন ‘লেবার রুম’-এ ছিলেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করা দরকার। তদন্ত কমিটি গড়তে মহকুমা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কমিটি হয়েছে বলে জানি না।’’ সুপার বলেন, ‘‘কমিটিতে কাদের রাখা হবে, তা ঠিক করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া।’’ বুলা, তাঁর সন্তানের দেহের ময়না-তদন্ত করাতে রাজি হয়নি পরিবার। মৃতার স্বামী সুশান্ত বারিকের দাবি, ‘‘যাঁরা ময়না-তদন্ত করবেন, তাঁরা এখানকার ডাক্তার। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কি জানা যাবে? সেই সন্দেহে ময়না-তদন্ত করাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন