অস্বচ্ছতা আর বরদাস্ত নয়, ফের বার্তা পুরুলিয়ায়

বললেন, ‘‘‘তোর বাড়ি করে দেব, পাঁচ টাকা দে’— এটা চলবে না। টাকাটা সরকারের। কারও ব্যক্তিগত নয়। এটা মানুষের অধিকার। মানুষ পাবে।’’ 

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:০৯
Share:

পুরুলিয়ার বেলগুমা পুলিশ লাইনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

পঞ্চায়েত ভোটে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল এলাকার একাংশে তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে। কারণ খুঁজতে জেলা স্তরেই কমিটি গড়েছিল শাসকদল। তৃণমূল সূত্রের খবর, যে সমস্ত কারণ সামনে উঠে এসেছে তার অন্যতম ছিল আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা নিয়ে মুখ খুললেন। বললেন, ‘‘‘তোর বাড়ি করে দেব, পাঁচ টাকা দে’— এটা চলবে না। টাকাটা সরকারের। কারও ব্যক্তিগত নয়। এটা মানুষের অধিকার। মানুষ পাবে।’’

Advertisement

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় জানিয়েছেন, পুরুলিয়ায় ‘বাংলা আবাস যোজনা’য় বাড়ি তৈরির লক্ষ্য ৩০,৪১৫টি। তার মধ্যে হয়েছে ১০ হাজার। বাকিটা জানুয়ারির মধ্যে হয়ে যাবে বলে প্রশাসনের আশা। কিন্তু যে কাজ হয়েছে, তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ বার ভোটের প্রচারে গিয়ে দলের এক তাবড় নেতাকে শুনতে হয়েছে, ‘‘‘টাকাও চাইবেন আবার ভোটও চাইবেন’, এটা তো হয় না।’’ এমনকি, জেলায় গোড়া থেকে যাঁরা তৃণমূলে রয়েছেন, এমন কয়েকজনকেও আবাস যোজনার বাড়ি পেতে টাকা দিতে হয়েছে বলে ক্ষোভ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘বাড়ির জন্য টাকা চাওয়ার কোনও অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে নিতে হবে। তখনই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সে আমি হই, তুমি হও।’’

এ দিনের বৈঠকে নিতুড়িয়ায় সরকারি কাজের ঠিকাদারের কাছে তোলা চাওয়া নিয়ে পুলিশ কী করেছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, নিতুড়িয়ায় কিসান মান্ডির একটি গোডাউন তৈরির কাজ চলছিল। সেখানে পাঁচ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ঠিকাদার। গত ১৩ অক্টোবর নিতুড়িয়া থানায় রুজু হওয়া ওই সংক্রান্ত মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূলেরই স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। দলের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, অন্য তিন জন অভিযুক্তও বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় শিল্প সংক্রান্ত সমস্যা দেখার জন্য শহরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়কে বা়ড়তি দায়িত্ব দেন।

Advertisement

বিরোধীদের অন্যতম অভিযোগ, সরকারি ভাতা বা প্রকল্পের পাশবই, চেকবই আটকে রেখে বৈধ প্রাপকদের বিপাকে ফেলেন শাসক দলের একাংশ। সভায় মমতার নির্দেশ—সরকারি ভাতার সমস্ত টাকা যাবে প্রাপকের অ্যাকাউন্টে। সে অ্যাকাউন্টের চেকবই, পাসবই— সব থাকবে প্রাপকের কাছেই। রেশন কার্ডও থাকবে গ্রাহকের কাছে। কোনও ডিলার তা আটকে রাখতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘পরিষ্কার, স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করার জন্য সবাইকে বলে গেলাম। বারবার এক কথা বলব না। এটা দল এবং সরকার, দু’দিকেরই নির্দেশ।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘নেতাদের দুর্নীতি ভোটের আগে দলের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বুঝেই, আজ এ সব বলতে বাধ্য হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement