নারদ কাণ্ড

বিকৃতি নেই ফুটেজে, বলছে রিপোর্ট

অডিও, ভিডিও মিলিয়ে মোট ৭৩টি ফাইল। এর মধ্যে খোলা গিয়েছে ৪৭টি। ২৬টি খোলা যায়নি। নারদ স্টিং অপারেশনের ফুটেজ পরীক্ষা করে চণ্ডীগড়ের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি কলকাতা হাইকোর্টে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৫৬
Share:

অডিও, ভিডিও মিলিয়ে মোট ৭৩টি ফাইল। এর মধ্যে খোলা গিয়েছে ৪৭টি। ২৬টি খোলা যায়নি। নারদ স্টিং অপারেশনের ফুটেজ পরীক্ষা করে চণ্ডীগড়ের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি কলকাতা হাইকোর্টে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

সম্প্রতি সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট মামলার সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন আইনজীবী। তাঁরা জানাচ্ছেন, ল্যাবরেটরির সফ্‌টওয়্যারের মাধ্যমে যে ফাইলগুলি খোলা গিয়েছে, তাতে কোনও বিকৃতি (ট্যাম্পারিং) বা সম্পাদনা (এডিটিং)-র চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এবং সেই ফাইলগুলিতে রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী, শাসক দলের নেতা এবং প্রশাসনিক কর্তার নাম এসেছে।

নারদ-কাণ্ড নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর একাধিক বার বলেছেন, ফুটেজ খাঁটি কি না, সেটা জানা জরুরি। ফুটেজ খাঁটি হলে সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক। খাঁটি না হলেও বিপজ্জনক। হাইকোর্ট প্রথমে ফুটেজ পাঠায় হায়দরাবাদের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। কিন্তু তারা জানায়, ওই ফুটেজ যাচাইয়ের পারদর্শিতা তাদের নেই। তারাই চণ্ডীগড়ের ল্যাবরেটরির নাম সুপারিশ করে। ২৪ জুন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ চণ্ডীগড়ের ল্যাবরেটরির ডিরেক্টরকে ফুটেজ যাচাই করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেয়। মামলার শুনানি চলাকালীন গত ৫ অগস্ট রিপোর্ট পাওয়ার কথা জানান প্রধান বিচারপতি। তবে সে দিন রিপোর্ট প্রকাশ করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। চেল্লুর জানান, ওই রিপোর্টের কিছু ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক রয়েছে। বিষয়টি স্পর্শকাতর। আদালত চায় না যে, এ নিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া জনতার দ্বারা প্রভাবিত (পাবলিক ট্রায়াল) হোক।

Advertisement

পরে লিখিত রায়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মামলায় নথিভুক্ত আইনজীবীরাই রিপোর্টের প্রতিলিপি পেতে পারেন। ম্যাথু স্যামুয়েলের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ, মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমার জুনিয়র রিপোর্টের প্রতিলিপি হাতে পেয়েছেন। ম্যাথুর আইনজীবী হিসাবে তাঁর সম্মানরক্ষা করা আমার দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব থেকেই আপনাদের জানালাম।’’

বিধানসভা ভোটের আগে গত মার্চ থেকে নারদ নিউজ দফায় দফায় বেশ কিছু ফুটেজ সম্প্রচার করে। সেই সব ফুটেজের সত্যতা আনন্দবাজারের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সেই সব ফুটেজে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী-নেতাকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। এর পরেই নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বিধানসভা ভোট মিটতেই ম্যাথুর বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। (নারদ ফুটেজে শোভনবাবুর ছবিও দেখা গিয়েছিল) সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জালিয়াতি, অপরাধের ষড়যন্ত্র-সহ চারটি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সেই তদন্তে শুক্রবারই স্থগিতাদেশ দিয়েছে কোর্ট। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গত শনিবার কলকাতা পুলিশের জারি করা লুকআউট নোটিসের ভিত্তিতে দিল্লি বিমানবন্দরে ম্যাথুকে আটক করে অভিবাসন দফতর। সেই রাতেই অবশ্য কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে হাইকোর্টের নির্দেশের কথা জেনে ছেড়ে দেওয়া হয় নারদ নিউজের সিইও-কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন