মতের ফারাক যাই থাক, গোত্র তাঁদেরই একই। বিরোধী। বিধানসভার মধ্যে তাই বাম-কংগ্রেসের ‘টিমে’ ঢুকতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু দিলীপ ঘোষের মুখের ওপর কার্যত দরজা বন্ধ করে দিলেন সুজন-মান্নানরা।
এ বার ভোটে খড়্গপুর থেকে জিতেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু। বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে ক’দিন আগে বিধানসভায় গিয়েছিলেন তিনি। সে দিনই দিলীপবাবু বলেন, বিধানসভার মধ্যে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁরা কক্ষ সমন্বয়ে আগ্রহী। কারণ, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আইনসভার মধ্যে বিরোধী ঐক্য রাখাটাই বুদ্ধিমত্তার কাজ হবে। কিন্তু বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সরকার বিরোধিতায় তাঁরা বিজেপিকে সঙ্গে নেবেন না। কেন? রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়ে মান্নান-সুজন বলেন— দিল্লিতে মোদী ভাই-দিদি ভাই আর এখানে লোক দেখানো দিদি-বিরোধিতা! বিজেপির এই কৌশল সবাই ধরে ফেলেছেন। তাই তৃণমূল বিরোধিতায় বিজেপিকে টিমে না নেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত বলে তাঁরা মনে করছেন।
মান্নানের ব্যাখ্যা, ‘‘দু’বছর ধরে সারদা-সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত লগ্নিকারীদের স্বার্থে আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে সিপিএম-কংগ্রেস কাছে এসেছে। আমরা পথে নেমে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। ভোটেও লড়েছি। সেখানে বিজেপি কোথায়?’’ মান্নানের অভিযোগ, ‘‘মোদী ক্ষমতায় আসার আগে সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু গোপন বোঝাপড়ায় তদন্ত বারবার হোঁচট খেয়েছে। দোষীরাও শাস্তি পায়নি।’’ সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি মানিকজোড়। বারবার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। তৃণমূল সরকারের কোনও প্রতিবাদ নেই। বিজেপির বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ, সেস বৃদ্ধি, শিক্ষায় গেরুয়াকরণ নিয়েও তৃণমূল চুপ। ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে চুপ কেন্দ্রও।’’ দু’পক্ষের গোপন বোঝাপড়ার এই আবহে রাজ্যবাসীকে বিভ্রান্ত করতেই দিলীপবাবু কক্ষ-সমন্বয়ের কথা বলছেন বলে অভিযোগ সুজনের।