জ্যোতি বসুর জন্মদিনে বিধানসভায় শ্রদ্ধা জানালেন মাত্র ২ জন সিপিএম বিধায়ক!

‘পরিবর্তন’ এনে নতুন সরকার আসার পরের বছরেই বসুর জন্মদিন পড়েছিল এমনই এক রবিবারে। সেই ৮ জুলাই বিধানসভার ফটক খোলা হয়নি বলে বিস্তর বিতর্ক বেধেছিল। বিরোধী দলনেতা তখন সূর্যকান্ত মিশ্র।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৪:১১
Share:

জ্যোতি বসুর ১০৫তম জন্মদিনকে এ বার সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রচারে বিশেষ ভাবে ব্যবহার করছে সিপিএম। —ফাইল চিত্র।

ছুটির দিনে বিধানসভা খুলে যাবতীয় আয়োজন করে রাখা ছিল। হাজির ছিলেন স্বয়ং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রবিবারের সকালে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর জন্মদিন পালনে দেখা গেল না পরিষদীয় দলের কোনও নেতাকেই! না শাসক, না বিরোধী!

Advertisement

অথচ ‘পরিবর্তন’ এনে নতুন সরকার আসার পরের বছরেই বসুর জন্মদিন পড়েছিল এমনই এক রবিবারে। সেই ৮ জুলাই বিধানসভার ফটক খোলা হয়নি বলে বিস্তর বিতর্ক বেধেছিল। বিরোধী দলনেতা তখন সূর্যকান্ত মিশ্র। সরকার পক্ষের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে ছ’বছর আগের সেই দিনে বিধানসভার হাইকোর্টের দিকের ফটকের বাইরে বসুর ছবিতে মালা দিয়ে বেঞ্চের উপরে বসে বক্তৃতা করেছিলেন তখন সদ্যপ্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম। আর এ বার বিধানসভায় ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও পরিষদীয় নেতারা কেউ না আসায় ‘মর্মাহত’ বর্তমান স্পিকার। তাঁর ক্ষোভ, গত রবিবার আর এক প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনেও প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছিল।

বসুর ১০৫তম জন্মদিনকে এ বার সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রচারে বিশেষ ভাবে ব্যবহার করছে সিপিএম। বসুকে সামনে রেখেই ‘সম্প্রীতি’র কর্মসূচি নিয়েছে সিটু। চলছে রক্তদান, আলোচনাসভা। অথচ বিধানসভার অলিন্দে এ দিন বসুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন মাত্র দু’জন সিপিএম বিধায়ক— তন্ময় ভট্টাচার্য ও সমর হাজরা! বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী দলীয় কর্মসূচিতে কোচবিহারে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কলকাতায় থাকব না বলেই প্রাক্তন বিধায়কেরা যাতে যান, সেই ব্যবস্থা করে এসেছিলাম।’’ প্রাক্তনদের মধ্যে রবীন দেব, অনাদি সাহু, দেবেশ দাস, রূপা বাগচী, আক্কেল আলিরা অবশ্য এসেছিলেন।

Advertisement

শাসক দলের নেতা তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দিনভর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ শিক্ষা দফতরের নানা কাজ সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি যাননি বিধানসভার অনুষ্ঠানে। ছিলেন না ডেপুটি স্পিকার হায়দর আজিজ সফি। কংগ্রেস বিধায়ক আলবিরুনি জুলকারনাইনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদহে যাওয়ায় বিধানসভায় ছিলেন না বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। বিজেপির কোনও বিধায়কও যাননি। বিধায়ক তথা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিজেপি দফতরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেশ প্রভু ও কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশের বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। দু’দিন আগেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে বিধানসভায় গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছিলেন শমীক ভট্টাচার্যের মতো প্রাক্তন বিধায়ক। তেমন কিছু অবশ্য এ দিন আর ঘটেনি। দিলীপবাবু যদিও বলেন, ‘‘কোথায় শ্রদ্ধা জানালাম, তাতে কী আসে যায়!’’

স্পিকার বিমানবাবু বলছেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক! আমরা সব পরিষদীয় দলকেই আমন্ত্রণ জানাই। কিন্তু পূর্বসূরিদের প্রতি বর্তমান নেতাদের যদি শ্রদ্ধা না থাকে, তা হলে আর কী করা যাবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন