তৃপ্তি: তীব্র গরমে ভরসা পথের জলসত্র। মঙ্গলবার দুপুরে, বি বা দী বাগে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
তীব্র গরমে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা শহরবাসীর। গোদের উপরে বিষফোঁড়া ঘন ঘন লোডশেডিং। এই দ্বিমুখী ফলায় প্রায় ফালাফালা অবস্থা সাধারণ মানুষের। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবল। ফলে খেলা দেখতে বিঘ্ন ঘটায় আগুনে ঘি ঢালার মতোই ক্ষোভ ছড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মঙ্গলবার রাজ্যের বিদ্যুৎকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, তীব্র দহনে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর আসায় মন্ত্রী নিজেও খানিকটা অস্বস্তিতে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পেলেই দ্রুত সেই জায়গায় গিয়ে তা সারানোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। তৎক্ষণাৎ মেরামতির কাজে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য ঠিকাকর্মীর সংখ্যা বাড়াতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সাত কোটি টাকা বরাদ্দ করছে।
বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকেই রাজ্যের প্রায় সর্বত্র লোডশেডিং শুরু হয়েছে। রাত ১১টার পরে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার খবর আসছে। কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকছে। কোথাও আবার লো-ভোল্টেজের কারণে আলো, পাখা, এসি, টেলিভিশন চলছে না। সিইএসসি এলাকায় বিক্ষিপ্ত দু-একটি ঘটনা ঘটলেও, বেশি ভুগতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার গ্রাহকদের।
শোভনদেববাবু ফের অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ চুরি করে খেলা দেখানো হচ্ছে। বেআইনি ভাবে দেদার এসি চলছে। মন্ত্রীর হিসেবে, প্রায় প্রতিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনেই অতিরিক্ত ২০-৩০ অ্যাম্পিয়ার করে লোড বেড়েছে। যার জেরে বিভিন্ন জায়গায় ফিউজ উড়ে যাচ্ছে বা বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনে ত্রুটি ধরা পড়ছে। তাঁর বক্তব্য, কিছু মানুষের বেআইনি কাজের জন্য ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
যদিও শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, সাব স্টেশন, ট্রান্সফর্মার-সহ পরিষেবা লাইন রক্ষণাবেক্ষণ না করায় সামান্য চাপেই বন্ধ হচ্ছে পরিষেবা। তাঁদের মতে, বিশ্বকাপের খেলা চলাকালীন গরম যে তীব্র হবে সম্ভবত তা কর্তারা আঁচ করতে পারেননি। যে কারণে চাহিদা চড়চড় করে বাড়তেই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দুর্বল পরিকাঠামো ভেঙে প়ড়ছে।
যদিও সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা বারবার বলেছে, গরম মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ রয়েছে। দিন কয়েক আগেই সিইএসসি এলাকায় ২০৯৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ওঠে। সেই বিদ্যুৎ জোগান দিতে সংস্থার সমস্যা হয়নি। সোমবার রাতে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ৬২০০ মেগাওয়াটের মতো। রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তাদের কথায়, সমস্যাটা বিদ্যুতের জোগান নিয়ে নয়। চাহিদা বাড়ায় বহু জায়গায় ট্রান্সফর্মার বসে যাচ্ছে, ফিউজ উড়ে যাচ্ছে, সমস্যা সেখানেই।