রুবিনা বেগম। নিজস্ব চিত্র
মোটে ১৯ বছর বয়স রুবিনা বেগমের। প্রথমবারের গর্ভাবস্থা। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করতে গিয়ে ডাক্তার দেখেন, গর্ভে একসঙ্গে চারটি সন্তান রয়েছে। আগামী মার্চের শেষে বা এপ্রিলের গোড়ায় প্রসব হওয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোর রাতেই তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। সকাল সাড়ে ছ’টায় ভর্তি করানো হয় মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে। সকাল ৯টায় প্রসব হয় রুবিনার। হাসপাতাল সূত্রে দাবি, চারটি কন্যা সন্তান এবং একটি অপরিণত মাংসপিণ্ডের জন্ম দেন রুবিনা।
একসঙ্গে চার বা পাঁচ সন্তানের জন্ম দেওয়া বিরল ঘটনা। মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ অলোক সাঁতরা দেখছিলেন রুবিনাকে। তিনি জানান, এমন ঘটনা ৮-১০ বছরে একটি ঘটে। চিকিৎসকের বক্তব্য, জিনগত কারণে এমনটা ঘটতে পারে। রুবিনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘স্বামী মকসেদ মহম্মদ দিনমজুর। গরিবের ঘরণী রুবিনা। তাঁর ওজন ছিল মোটে ৩৯ কেজি।’’ এত কম ওজনে এতগুলি বাচ্চা নিয়ে পূর্ণ গর্ভাবস্থা কাটানো কঠিন বলেই বিশেষজ্ঞদের মত। অলোকবাবু বলেন, ‘‘আর এক মাস পরে জন্মালে বাচ্চাদের শারীরিক অবস্থা আরও ভাল হত।’’
কেমন আছেন রুবিনা? অলোকবাবু বলেন, ‘‘রুবিনার নর্মাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে প্রচুর রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে। তবে রুবিনার তেমন রক্তপাত হয়নি। উনি সুস্থই আছেন।’’ কেমন আছে তাঁর সন্তানেরা? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের সময়ে চারটি কন্যার ওজন ছিল ৩৮৫ গ্রাম, ৫৮৫ গ্রাম, ৬৮২ গ্রাম, ৯০০ গ্রাম। বাকি অসম্পূর্ণ মৃত সন্তানটির দু’টো পা ও একটি হাত তৈরি হয়েছিল। মেখলিগঞ্জ থেকে রুবিনা ও তাঁর সন্তানদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। মেখলিগঞ্জ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সুজয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিশুগুলি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল ছিল। তাই রেফার করা হয়েছে।’’ একটি অসমর্থিত সূত্রে জানাচ্ছে, পথে এক সন্তানের মৃত্যু হয়। তবে বাকি তিন সন্তান ও রুবিনা ভাল রয়েছে।