ডেঙ্গি-সচেতনতায় এ বার লাগাতার মাইক-কামান

স্বাস্থ্য ভবনের খবর, ওই জেলার যে-সব এলাকায় এ বছর মশাবাহিত রোগের দাপট প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বারবার বারণ করা সত্ত্বেও সেখানকার বাসিন্দারা বাড়িতে জল জমিয়ে রাখার অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ধোঁয়ার কামান দেগে মশাদের খুব কিছু বিপাকে ফেলা গিয়েছে, এমন প্রমাণ নেই। সেই প্রমাণ মিলুক না-মিলুক, এ বার মানুষকে ডেঙ্গি-সচেতন করতে একেবারে কানের গোড়ায় মাইক-কামান দাগার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন! সারি সারি অটোয় মাইক বেঁধে কান ঝালাপালা করে দেওয়ার উদ্যোগ চলছে। তাতেও মানুষের টনক নড়ানো যাবে কি না, সংশয় থাকছেই। কেননা বছরের পর বছর ডেঙ্গিতে প্রাণহানি হতে দেখেও মানুষের ভ্রুক্ষেপ নেই।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবনের খবর, ওই জেলার যে-সব এলাকায় এ বছর মশাবাহিত রোগের দাপট প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বারবার বারণ করা সত্ত্বেও সেখানকার বাসিন্দারা বাড়িতে জল জমিয়ে রাখার অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না। জমানো জল ডেঙ্গির জীবাণুবাহক মশার বংশবৃদ্ধির সহায়ক হচ্ছে। তাই মাইকে সচেতনতা প্রচারের মাত্রা দ্বিগুণ করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। তারস্বরে নিরন্তর মাইক বাজালে যে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে, তার কী হবে? সরাসরি এর উত্তর মিলছে না। স্বাস্থ্য শিবিরের কেউ কেউ জনান্তিকে বলছেন, মাইক-কামান যদি ডেঙ্গি-সচেতনতা বাড়াতে পারে, তবে আপাতত সেটাই হোক।

দেগঙ্গা, হাবড়া ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত, গাইঘাটা এবং বাদুড়িয়াকে রেখে ২৫ কিলোমিটারের একটি যাত্রাপথ তৈরি করা হয়েছে। ওই যাত্রাপথে প্রচারে নামবে শতাধিক অটো। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ বার কান ঝালাপালা করে দেওয়া মাইকিং চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। অন্তত বিরক্ত হয়েই মানুষ যদি জল জমানোর অভ্যাস ত্যাগ করেন!’’ ডেঙ্গি-পরিস্থিতি দেখতে শনিবার বনগাঁ-গাইঘাটা, হাবড়া-অশোকনগর ও দেগঙ্গায় যান স্বাস্থ্যকর্তারা। সন্ধ্যায় জেলাশাসকের কার্যালয়ে মাইকে প্রচার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানান, ডেঙ্গি সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, এমন বাড়িতেও জমা জলে এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা মিলেছে।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে। ঠিকমতো কাজ হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারি করবেন বিডিও-রা। ডেঙ্গি রোধে মাসের প্রথমেই ‘গ্রামীণ পরিচ্ছন্ন সপ্তাহ’ পালনের নির্দেশ জারি করেছে পঞ্চায়েত দফতর।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাসপাতালগুলিতে যাতে প্রোটোকল মেনে ডেঙ্গিরোগীদের চিকিৎসা হয়, সবার আগে সেটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল। আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টাও চালাচ্ছি নিরন্তর। আশা করছি, সুফল পাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement