শুশ্রুষা: নার্সিংহোমে জীবেশ সরকার। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ফের এক ব্যক্তির মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল লাগোয়া কাওয়াখালির একটি নার্সিংহোমে তিনি মারা যান। নার্সিংহোম এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তার নাম মনক রায় (৩৭)। বাড়ি শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে বোতলকোম্পানি মোড় এলাকায়। গত শনিবার দুপুরে তাঁকে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ তিনি মারা যান। মৃত্যুর শংসাপত্রে ‘এনএসওয়ান রিঅ্যাকটিভ’ লেখার পাশাপাশি বলা হয়েছে, ভাইরাল হেমারজিক ফিভার।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘এনএসওয়ান মানেই ডেঙ্গি বলা যাবে না। ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় ওই রোগীর কী রিপোর্ট এসেছে, তা খোঁজ নিচ্ছি।’’ তাঁর দাবি, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গিতে শহরে ৪ জন মারা গিয়েছে। যদিও বেসরকারি হিসাবে সংখ্যাটা ১১। শিবমন্দির এলাকার এক বাসিন্দাও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন। শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার একশোর মতো।
মনকের পরিবারের দাবি, ডেঙ্গি হয়েছে বলেই চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার থেকেই জ্বর ছিল। তাই প্রধাননগরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। প্লেটলেট কাউন্ট ওই দিন ছিল ৯২ হাজার। চিকিৎসক বাড়িতে রেখেই চিকিৎসার কথা বলেন। পরদিন প্লেটলেট নেমে যায় ৫২ হাজারে। পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে দেখে চিকিৎসক না-চাইলেও জোর করেই তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। মৃতের ভাই মানিক রায় বলেন, ‘‘এত করেও ওকে বাঁচাতে পারলাম না। ডেঙ্গিতেই মারা গিয়েছে বলেই কিন্তু চিকিৎসক জানিয়েছেন।’’
তবে মৃত্যুর শংসাপত্রে সরাসরি ডেঙ্গিতে মৃত্যু না-লিখে ‘এনএসওয়ান রিঅ্যাকটিভ’ বলা হয়েছে। সঙ্গে ভাইরাল হেমারজিক ফিভার এবং সেপটিক শকেরও উল্লেখ করা হয়েছে। মানিক কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘‘চিকিৎসা করা সত্ত্বেও জ্বরে কয়েক দিনের মধ্যে যে ভাবে দাদাকে হারাতে হল, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’
এর মধ্যে এ দিনই সকালে জ্বর নিয়ে কলেজ পাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সভাপতি জীবেশ সরকারকে। দুই সিপিএম কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ জয় চক্রবর্তী এবং পরিমল মিত্র জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে শহরের দুটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বর নিয়ে রোগীর ভিড়। নার্সিংহোমেও ডেঙ্গি ও ভাইরাল জ্বর নিয়ে অন্তত ৫০ জন ভর্তি।