জন্মদিনে মিলল দুই বাংলা

তরুবালাদেবীর পরিবার সূত্রের খবর, একশো বছর আগে বাংলাদেশের ফরিদপুরেই জন্ম হয় তাঁর।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪৯
Share:

তরুবালাদেবীকে ঘিরে তাঁর পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।

দুই বাংলার মিলনই বটে। নিজের শততম জন্মদিনে সেই কাজটিই যেন করলেন তরুবালা দাস। শুক্রবার রাতে আলিপুরদুয়ার ও বাংলাদেশের ফরিদপুরে ধুমধাম করে পালন করা হল তাঁর জন্মদিন। আলিপুরদুয়ারের সূর্যনগরে তাঁর বাড়ি সাজানো হল বেলুন আর আলো দিয়ে। বারান্দায় সুসজ্জিত সিংহাসনে বসে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে কাঁপা কাঁপা হতে কেক কাটলেন তিনি। বাংলাদেশের ফরিদপুরে তাঁর জন্মদিন পালন করলেন বৃদ্ধার ভাইয়েরা।

Advertisement

তরুবালাদেবীর পরিবার সূত্রের খবর, একশো বছর আগে বাংলাদেশের ফরিদপুরেই জন্ম হয় তাঁর। স্বাধীনতার পর পর স্বামীর সঙ্গে এ দেশে চলে আসেন তিনি। পেশায় সোনার ব্যবসায়ী স্বামী প্রথমে তেলিপাড়ার দিকে থাকতে শুরু করেন। পরবর্তীতে সূর্যনগর এলাকায় এক টুকরো জমিতে বাড়ি বানান তিনি। তবে বেশ কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয় তাঁর। বর্তমানে সূর্যনগরের বাড়িতে তিন ছেলে, তাদের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে থাকেন বৃদ্ধা। মেয়েদের আগেই বিভিন্ন জায়গায় বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশের ফরিদপুরে বাবার বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধার ভাইয়েরা। রয়েছে ভাইদের পরিবারের সদস্যরাও। বয়সের ভারে জর্জরিত তরুবালার দীর্ঘদিন থেকেই কাঁটাতার পেরিয়ে বাবার বাড়িতে যাতায়াত বন্ধ। কখনও কখনও মোবাইয়ে ভাইদের সঙ্গে একটু-আধটু যোগাযোগ হয়, এই পর্যন্তই।

Advertisement

বৃদ্ধার বড় ছেলে সুকুমার দাস বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে শিলিগুড়ি থেকে দিদি ফোনে মায়ের একশো বছর পুর্তির কথা জানায়। সঙ্গে সঙ্গে ভাইদের সঙ্গে আলোচনা করি। শুক্রবার ঘটনা করে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেই। বাংলাদেশে মামাদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরাও জানান, একইদিনে ফরিদপুরে মায়ের জন্মদিন পালনের কথা।’’ মেজো ছেলে বিষ্ণুপদ বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন থেকে মায়ের শরীরটা খারাপ ছিল। টানা বিছানাতেই পড়ে ছিলেন তিনি। ফলে কী হবে তা ভেবে চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু শুক্রবার সকাল হতে না হতেই মা যেন একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠেন।’’ছোট ছেলে গোবিন্দ বলেন, ‘‘একশো বছর বয়সেও মা সঙ্গে রয়েছে। আমরা তাঁর জন্মদিন পালন করছি। এটা যে জীবনের কত বড় আনন্দ তা বলে বোঝাতে পারব না। বাংলাদেশে মামারাও খুব খুশি।’’ সিংহাসনে বসে তরুবালাও তখন বিরবির করে বলে চলছেন, ‘‘খুব ভাগ্য করে এমন সন্তান বা ভাইদের পেয়েছি, যারা আমায় এত ভালবাসে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন