উত্তরের দুই শহিদ জওয়ানকে শ্রদ্ধা

২০০০ সালের ১৮ জানুয়ারি কাশ্মীরে জঙ্গিদের পাতা ল্যাল্ডমাইন বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছিল বিএসএফ জওয়ান আব্দুল মজিদের৷ শুক্রবার ময়নাগুড়ির বার্নিশে ওই জওয়ানের স্কুলে গিয়ে তাকে সম্মান জানালেন বিএসএফ কর্তারা ৷ নিজের স্কুলেই বসল মজিদের নামে একটি ফলক ৷

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২২
Share:

ধূপগুড়িতে শহিদ দিবস স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ধূপগুড়ির শহিদ জওয়ান শুভেন্দু রায়ের স্ত্রী অঞ্জনা রায়।

২০০০ সালের ১৮ জানুয়ারি কাশ্মীরে জঙ্গিদের পাতা ল্যাল্ডমাইন বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছিল বিএসএফ জওয়ান আব্দুল মজিদের৷ শুক্রবার ময়নাগুড়ির বার্নিশে ওই জওয়ানের স্কুলে গিয়ে তাকে সম্মান জানালেন বিএসএফ কর্তারা ৷ নিজের স্কুলেই বসল মজিদের নামে একটি ফলক ৷ সেইসঙ্গে ফের একবার নিজেদের গর্বকে স্মরণ করলেন এলাকার মানুষ৷ ময়নাগুড়ির বার্নিশ উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক প্রাক্তন ছাত্রই পরবর্তীতে যোগ দিয়েছেন সেনাবাহিনী বা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে। সেই তালিকায় রয়েছেন আব্দুল মজিদও ৷

Advertisement

তাই বিএসএফের ১৩নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কম্যান্ডেন্ট দীপক কান্ডপালও এ দিন বলেন, ‘‘দেশ রক্ষায় আব্দুল মজিদ শহিদ হয়েছেন ৷ উনি আমাদের সকলের গর্ব ৷ আমরা চাই তাকে দেখে সবাই এভাবেই দেশ রক্ষায় উদ্বুদ্ধ হোক ৷’’ মজিদ চাকরি করতেন বিএসএফের ৩০ নম্বর ব্যাটেলিয়নে৷

তবে এ দিন ১৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের তরফে এই জওয়ানকে নিজের স্কুলে শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ স্কুলের মাঠের এক কোণে মজিদের নামাঙ্কিত ফলকটির আবরণ উন্মোচন করেন দীপক কান্ডপাল ৷ যে ফলকে মজিদের ছবির পাশাপাশি রয়েছে দেশের প্রতি তার অবদানের কথা ৷ এ দিনের অনুষ্ঠানে বিএসএফ কর্তাদের পাশাপাশি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকা-ছাত্র-ছাত্রী ও মজিদের বাড়ির লোক উপস্থিত ছিলেন৷ ভিড় করেছিলেন গোটা এলাকার মানুষ।

Advertisement

বার্নিশে শহিদ আব্দুল মজিদকে শ্রদ্ধা।

জম্বুর উধমপুরে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত ধূপগুড়ির ডাউকিমারি গ্রামের মৃত সেনা জওয়ান শুভেন্দু রায়ের প্রতিও শহিদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাল বিএসএফ। দু’মাস বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে ফের সেনা ছাউনিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন শুভেন্দু। তখনই জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তিনি। শুক্রবার বিএসএফের রানিনগর সেনা ছাউনির ৬১ নম্বর ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ধূপগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শুভেন্দুবাবুর প্রতিকৃতি সহ এক ফলক উন্মোচন করা হয়। যৌথভাবে ফলক উন্মোচন করেন বিএসএফের ৬১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সহকারি নিদের্শক দেবেন্দ্র সিংহ ও ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়। অনুষ্ঠানে রানিনগর বিএসএফ ৬১ ব্যাটালিয়নের সহকারি নির্দেশকের সঙ্গে আসেন অন্য জওয়ানরা। সহকারি নির্দেশক দেবেন্দ্র সিংহ বলেন, “বীরত্বের সঙ্গে জঙ্গিদের সাথে লড়াই করে নিজের প্রাণ দিয়ে অন্য জওয়ানদের রক্ষা করেছেন শুভেন্দুবাবু। তাই বীর শহিদকে মরণোত্তর রাষ্ট্রপতি পুলিশ বীরত্ব পদক দেওয়া হয়।” এ দিন শহিদ দিবস স্মরণ অনুষ্ঠানে শুভেন্দুবাবুর স্ত্রীর হাতে বিএসএফের পক্ষ একটি শাল তুলে দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

১৯৫৯ সালের ২১ অক্টোবর চিন সীমান্তের লাদাখে বন্ধুত্বের আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে চিনা সেনারা ভারতের সেনা অফিসার সহ ২০ জনকে গুলি করে। ১০ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই দিন থেকে প্রতি বছর ২১ অক্টোবরকে শহিদ দিবস হিসাবে পালন করা হয়। গত এক বছরে বিভিন্ন জঙ্গি হামলায় দেশের বিভিন্ন বাহিনীর ৪৭৩ জন অফিসার ও জওয়ান শহিদ হয়েছে বলে সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

— নিজস্ব চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement