মালদহের সামসিতে ১০ বছরের বালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনার দু’দিন বাদে পক্সো আইনে মামলা রুজু করল পুলিশ।
মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করার পর তাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে শনিবার পুলিশে অভিযোগ জানালেন বালিকার বাবা। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই পক্সো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেনসেস) আইনে মামলা করা হয়েছে। ওই ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাদের নাম পাপ্পু হরিজন, সুভাষ হরিজন ও মঙ্গল প্রসাদ। ওই বালিকার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা চালু করা হলেও বিষয়টি নিয়ে অবশ্য এখনই মুখ খুলতে চায়নি পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ময়নাতদন্তেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
বৃহস্পতিবার রাতে সামসিতে একটি মার্কেট কমপ্লেক্স থেকে বছর দশেকের ওই বালিকার দেহ উদ্ধার হয়। বালিকার মৃতদেহের ঠিক পাশেই পড়েছিল একাধিক মদের বোতল। ওই মার্কেট কমপ্লেক্সটির ছাদে ওঠার দুটি সিঁড়ি রয়েছে। একটি সব সময় বন্ধ থাকে। সেই বন্ধ সিঁড়ির দরজায় বালিকার দেহ ঝুলছিল। ওই দরজার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। শরীরে রক্তের দাগ থাকায় বালিকাকে গণধর্ষণের পর খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের। সামসি পুলিশ ফাঁড়ির থেকে খুব কাছেই ওই ঘটনায় এলাকায় একইসঙ্গে ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ বালিকারা প্রশ্ন তোলেন, পুলিশের নাকের ডগায় বসে দুষ্কৃতীরা এমন কাজ করার সুযোগ পায় কী করে?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পারিবারিক বিবাদে জড়িয়ে বালিকার মা জেলে রয়েছেন। বাবা বিয়ে করে অন্যত্র সংসার পেতেছেন। তাই নিজের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের গোবরাহাট এলাকায় হলেও ওই বালিকা দাদু দিদিমার সঙ্গে সামসিতে থাকত। দাদু নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে ঝাড়ুদারের কাজ করতেন। রাতে থাকতেনও সেখানেই। তাঁর মৃত্যুর পর দিদিমা নাতনিকে নিয়ে হরিজন পাড়ায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। সেখান থেকেই ভিক্ষে করে সংসার চালাতেন। ফলে ওই ঘটনায় কেউ অভিযোগ না জানানোয় পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করে। কিন্তু এ দিন তার বাবা পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার পর নতুন করে মামলা চালু করা হয়। পরে হরিজনপাড়া থেকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে পুলিশ।