দুই বাংলার সীমান্তে এখন ওদেরই কথা

দেবীপক্ষে ঘরে ফিরল ও পারের তিন কন্যা

মা কে দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনতো ওরা। পুজো শুরুর মুখে সেই প্রতীক্ষারই অবসান হল। দীর্ঘ পাঁচ মাসের মাথায় সোমবার কোচবিহারের শহিদ বন্দনা স্মৃতি আবাস থেকে বাংলাদেশে নিজেদের বাড়ি ফিরল তিন বোন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৪৮
Share:

মা কে দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনতো ওরা। পুজো শুরুর মুখে সেই প্রতীক্ষারই অবসান হল। দীর্ঘ পাঁচ মাসের মাথায় সোমবার কোচবিহারের শহিদ বন্দনা স্মৃতি আবাস থেকে বাংলাদেশে নিজেদের বাড়ি ফিরল তিন বোন। এখন চলছে এ পার বাংলার হোম কর্তৃপক্ষের দেওয়া পুজোর জামা পড়ে ও পার বাংলার মণ্ডপে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সময় গোনা।

Advertisement

এ দিন সকালে হোম থেকে তাদের চ্যাংরাবান্ধা নিয়ে যাওয়া হয়। দিনভর আইনি জটিলতার পর অবশেষে সন্ধে নাগাদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওপারে পৌঁছোন। বাংলাদেশের লালমণিরহাট পুলিশের হাতে কোচবিহার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির প্রতিনিধিরা ওই তিন নাবালিকাকে তুলে দেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রশাসনের তরফে বগুড়ার বাসিন্দা ওই নাবালিকাদের তাদের মা’য়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। দুই বাংলার সীমান্তের বাসিন্দাদের মুখেই এ দিন ঘুরছে ওই গল্প। জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার স্নেহাশিস চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের বাসিন্দা তিন নাবালিকাকে সে দেশে ফেরানো হয়েছে।” চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য নিতাই সরকার বলেন, “দিনভর উদ্বেগে ছিলাম। সন্ধ্যে নাগাদ ওরা সীমান্ত পেরোনোর পর স্বস্তি মিলেছে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই তিনজনের নাম তমারানী, দীপান্বিতা ও টুসু কর্মকার। দীপান্বিতা ও টুসি সহোদর বোন। তমারানী তাদের কাকুর মেয়ে। সকলেরই বয়স ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে। গত জুলাই মাস থেকে কোচবিহারের শহিদ বন্দনা স্মৃতি আবাস ছিল ওই তিন কন্যার অস্থায়ী ঠিকানা। বাংলাদেশের বাসিন্দা ওই তিনজন নাবালিকাকে তাদের মায়ের কাছে ফেরাতে প্রশাসনিক তৎপরতা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর ও বাংলাদেশ হাই কমিশনের তরফেও উদ্যোগ নেওয়া হয়। মেখলিগঞ্জের বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র বলেন, “কিছু জটিলতার জন্য দেরি হলেও শেষ পর্যন্ত শিশুদের হস্তান্তর হয়েছে।”

Advertisement

চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বগুড়ার বাসিন্দা দুই ভাই কয়েকমাস আগে পাসপোর্ট করে এ দেশে আসেন। সঙ্গে আনেন নাবালিকা কন্যাদের। তাদের পাসপোর্ট ছিল না। বাংলাদেশে অপহরণের অভিযোগ দায়েরের পর শিলিগুড়িতে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন বোনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কোচবিহারের হোমে। দীপান্বিতার কথায়, ‘‘গত বার মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলাম মণ্ডপে। এবারেও খুব ঘুরব।’’ কমিটির এক কর্তা জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে ধৃত নাবালিকাদের অভিভাবকরা জামিনও পেয়েছেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় অবশ্য বাংলাদেশে ফিরতে পারেননি।

এ দিন চ্যাংরাবান্ধায় যাওয়া জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন ইউনিটের কর্মী মার্সেলিনা রহমান, বেদস্মৃতি ভট্টাচার্যরা বলেন, “পুজোর আগে মেয়েরা মায়ের কাছে ফিরতে পারছে এটা আমাদেরও সত্যিই দারুণ লাগছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন