ডাকাত সন্দেহে ধৃতদের তৃণমূল যোগের নালিশ

বুধবার কোতোয়ালি থানার পুলিশ দিনহাটা রোডের মাষানপাট থেকে ছ’জনকে ডাকাত সন্দেহে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে তিনটি পিস্তল ও ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কাউকে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের মিছিলে। কেউ আবার তৃণমূল নেতার গাড়িতে করেই ঘুরে বেড়াতেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ উঠেছে, বুধবার ডাকাত সন্দেহে ধৃত ছ’জনের প্রায় প্রত্যেকেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাদের কাছ থেকে ৩টি পিস্তল-সহ নানা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

বুধবার কোতোয়ালি থানার পুলিশ দিনহাটা রোডের মাষানপাট থেকে ছ’জনকে ডাকাত সন্দেহে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে তিনটি পিস্তল ও ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ধৃতদের নাম, জিয়ারুল হক, হাফিজুল রহমান, ওয়াসিম আক্রম, দিলওয়ার হোসেন, রেজাউল করিম ও মিন্টু রহমান রয়েছে। এদের প্রত্যেকের বাড়ি দিনহাটায়। এদের মধ্যে হাফিজুল, দিলওয়ার, রেজাউলকে তৃণমূলের মিছিলে বহুবার দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য ওই বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। কেউ কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি না তা নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত চলছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দুষ্কৃতীদের তৃণমূলে কোনও জায়গা নেই। বিরোধী দলের সঙ্গেই এই দুষ্কৃতীদের যোগ রয়েছে। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতাদের আশ্রয়ে রয়েছে বহু দুষ্কৃতী। যারা অস্ত্র লুকিয়ে রয়েছে। তৃণমূলের নিজেদের দ্বন্দ্বে বা বিরোধীদের সঙ্গে গণ্ডগোলে ওই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। আবার ডাকাতি, ছিনতাই ওই অস্ত্র দেখিয়েই করছে দুষ্কৃতীরা। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “পর পর ঘটনায় এটা প্রমাণিত তৃণমূলে দুষ্কৃতী ছাড়া কিছু নেই। শাসক দলের আশ্রয়েই নানা দুষ্কর্ম করছে তারা। পুলিশের এ ব্যাপারে আরও কার্য়করী ভুমিকা নেওয়া উচিত।”

Advertisement

ডাকাত সন্দেহে ধৃতদের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের এমন যোগের অভিযোগ ওঠায় কোচবিহারে অস্বস্তিতে দল। দিন কয়েক আগেও ডাকাত সন্দেহে ধৃত সুজন ইসলাম এবং উমর ফারুক সহ পাঁচ জনকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ ধরা হয়। কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে সুজনের একটি ছবিও প্রকাশ্যে আসে। উমর ফারুককে সঙ্গে দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মীর হুমায়ন কবীরের গাড়িতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ।

দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ্য নুর আলম হোসেন দাবি করেন, ধৃতরা কেউ তৃণমূলের নয়। তিনি বলেন, “এলাকার মানুষই জানিয়ে দেবেন ধৃতরা নানা দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাঁদের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।” সাংসদ পার্থবাবু ও ব্লক সভাপতি মীর হুমায়ন কবীর আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। তাঁদের কথায়, ‘‘কে কখন কোথায় ছবি তুলছে বা কোথায় সভায় যোগ দিচ্ছেন তা সবসময় নজর রাখা যায় না। তা নিয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন