ধৃত: ধর্ষণে যুক্ত ন’জনকে দোষী সাব্যস্ত করল রায়গঞ্জ জেলা আদালত। নিজস্ব চিত্র
দুই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার দায়ে নয় যুবককে দোষী সাব্যস্ত করল রায়গঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা দ্বিতীয় (পকসো) আদালত। বৃহস্পতিবার ওই আদালতের বিচারক সেলিম সাহি অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ, শুক্রবার আদালত দোষীদের সাজা ঘোষণা করবে। ঘটনার দেড় বছরের মাথায় সাজা ঘোষণা হতে চলেছে। দুই আদিবাসী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক একটি মামলা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা প্রথম আদালতে চলছে। তাতেও এই ন’জনই অভিযুক্ত।
দোষীদের নাম সিদ্ধার্থপ্রসাদ নুনিয়া, পান্না সরকার, নবীন শীল, মুন্না রায়, বাপ্পা পাসওয়ান, উৎপল চাকি, জয়ন্ত দাস, বিজয় দাস ও চন্দন দত্ত। তাদের বাড়ি রায়গঞ্জ ও ইটাহার থানার বিভিন্ন এলাকায়। গত বছর ৯ জুলাই বিজেপির ডাকা বাংলা বন্ধ ছিল। দুই আদিবাসী নাবালিকা এবং দুই আদিবাসী তরুণী রায়গঞ্জ শহরের পুর বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি ধরবে বলে অপেক্ষা করছিলেন। তরুণীদের একজন শহরের একটি বেসরকারি হাইস্কুলের শিক্ষিকা। ওই ন’জন তখন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে, খুনের হুমকি দিয়ে প্রথমে বাসস্ট্যান্ডের দোতলায় ও পরে বাসস্ট্যান্ডের বাইরের একটি পানশালার উপরে নিয়ে গিয়ে তাঁদের যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রায়গঞ্জ। ১৪ জুলাই আদিবাসীরা রায়গঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। দোকান, বাইক ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেয় উত্তেজিত আন্দোলনকারীরা।
ওই মামলাটি লড়েন সরকারি তিন আইনজীবী প্রবীর ঝা, রথীন আচার্য ও কুণাল মণ্ডল। তাঁরা জানিয়েছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে দুই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ, যৌন হয়রানির অভিযোগে পকসো ও এসসি-এসটি অ্যাক্ট-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি, একই মামলায় সিদ্ধার্থ ও পান্নার বিরুদ্ধে আলাদা করে ধর্ষণের অভিযোগে জামিনঅযোগ্য ৩৭৬ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার ধারা অনুযায়ী দোষীদের সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজা হতে পারে বলে আইজীবীদের দাবি।
প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ, মামলার সাক্ষী ও নিগৃহীত নাবালিকাদের-সহযোগিতা ছাড়া এত তাড়াতাড়ি এই মামলায় ফয়সালা হওয়া সম্ভব ছিল না।’’ পরে দোষীদের আইনজীবী তরুণ সরকার জানিয়েছেন, নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।