আরাধনা: পুজো করছেন জয়াদেবী। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে কোনও বিশেষ পুজো হোক বা বাইরে কোথাও, মন্ত্রোচ্চারণের শব্দ পুরুষ কণ্ঠে শোনাই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই অভ্যেসে যেন ধাক্কা দিল জলপাইগুড়ির একটি স্কুল। শনিবার সেখানে পুজোর মন্ত্র শোনা গেল মহিলার কণ্ঠে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া কোনপাকুড়ির বিবেকানন্দ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
এ দিন সেখানে সরস্বতী পুজো করেন বিদ্যালয়ের চুক্তিভিক্তিক শিক্ষিকা জয়া চক্রবর্তী অধিকারী। হঠাৎ এই পরিকল্পনা কেন? স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আলো সরকার বলেন, ‘‘মেয়েরা সবদিকেই এগিয়ে চলেছে। তাহলে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না কেন?’’ আলোদেবীর দাবি, বাড়ির পুজো তো মেয়েদের পালন করতে হয়। তাহলে অন্য জায়গায় পুজো কেন করতে পারবে না।’’ এ দিন সঙ্গে করে একটা খাতা নিয়ে এসেছিলেন জয়াদেবী। সেখানে লেখা ছিল পুজোর মন্ত্র। তা দেখেই পুজো সারেন তিনি।
এ দিন জয়াদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামী বিপ্লব অধিকারী পুরোহিতের কাজ করেন। তাঁর কাছেই পুজোর শিক্ষা নিয়েছি। প্রায় দু’ঘণ্টা লেগেছে পুজো শেষ করতে।’’ পুরোহিত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বেশ ভাল লেগেছে বলেই জানান তিনি।
মহিলা পুরোহিত দিয়ে পুজো করাতে কোনও বাধা এসেছিল? এই নিয়ে ভাবতে নারাজ প্রধান শিক্ষিকা আলো সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রথা ভাঙতে পেরে খুশি। পুজো দেখতে স্থানীয়রাও ভিড় করেছিলেন। এখন থেকে বিদ্যালয়ের সরস্বতী পুজো আমাদের দিদিমণিরাই পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করবেন।’’ এ দিন স্কুলের পুজোয় বাকিদের সঙ্গে অঞ্জলি দিয়েছে একাদশ শ্রেণির সুমিত্রা রায়। সে বলেন, ‘‘আমি প্রথম দেখলাম কোনও মহিলা পুজো করলেন। আমাদেরই স্কুলে সেটা হওয়ায় আমি খুব খুশি।’’