Tmc

নেতা হয়েই চড়ছেন গাড়ি, ক্ষোভ দলে

কর্মীদের একাংশের ইঙ্গিত, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েক জন জেলাস্তরের নেতাদের দিকেই।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস 

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৯
Share:

প্রতীকী চিত্র

‘বিলাসবহুল জীবনযাত্রা ছেড়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে। নেতা হয়েই চার-পাঁচটা গাড়ি নিয়ে ঘুরবেন না। সাদামাঠা জীবনযাপন করুন’’— গত সোমবার বালুরঘাটের পতিরামে তৃণমূলের কর্মিসভায় এমনই বলেছিলেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চর্চা।

Advertisement

আড়ালে দলের নিচুতলার কর্মীরা বলছেন, ‘‘আমরা বুথস্তরের সাধারণ কর্মী। সব সময় মাটির সঙ্গেই থাকি। তাই আমাদের ডেকে জনসভা করে এ কথা না বললেও চলত। বরং ওই বার্তা সেই মঞ্চে থাকা কয়েক জন নেতাকে দিলে কাজ হত।’’

কর্মীদের একাংশের ইঙ্গিত, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েক জন জেলাস্তরের নেতাদের দিকেই। দলের অন্দরমহলের খবর, জেলা তৃণমূলে দু’জন কার্যকরী সভাপতি রয়েছেন। এক জন হরিরামপুরের সোনা পাল, অন্য জন বালুরঘাটের দেবাশিস মজুমদার। দলের নেতাদের একাংশের অভিযোগ, ওই দুই নেতা সম্প্রতি দায়িত্ব পেয়েই নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘুরছেন। সোনা পাল জেলা পরিষদের মেন্টর-ও।

Advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে দলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তিনি গাড়িতে নীলবাতি লাগিয়ে ঘোরেন। সঙ্গে গোটা দশেক গাড়িতে থাকেন তাঁর ‘পার্ষদেরা’। অভিযোগ, সাধারণ মানুষ তো দূর, দলের অনেক কর্মীও তাঁর ‘নাগাল’ পান না। একই অভিযোগ দেবাশিসের বিরুদ্ধেও। কর্মীদের নালিশ, কয়েক দিন আগে দায়িত্ব পেয়েই তিনি নিরাপত্তারক্ষী সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন।

কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, নেতাদের এমন ‘চালচলনেই’ সাধারণ মানুষ দলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এতে জনসংযোগ ছিন্ন হচ্ছে। যার প্রভাব ভোটবাক্সে পড়েছে।

তবে সোনার দাবি, ‘‘আমরা সকলেই সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করি। জেলায় দলের অবস্থা আগের থেকে ভাল হয়েছে। তা আরও ভাল করতেই পর্যবেক্ষক ওই কথা বলেছেন।’’ দেবাশিসের বক্তব্য, ‘‘আমি আগে যা ছিলাম, এখনও তাই রয়েছি। শহরে এখনও মোটরবাইক নিয়েই চলাফেরা করি। সিডব্লুসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিরাপত্তা পেয়েছি। সেটাও সবসময় আমি নিই না।’’

শুধু ওই দুই নেতাই নয়, কয়েক মাস আগে দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়া বুনিয়াদপুরের এক শিক্ষকনেতার বিরুদ্ধেও বিলাসবহুল গাড়ি কেনার অভিযোগ উঠেছে। দলীয় সূত্রে খবর, কী ভাবে লক্ষাধিক টাকার গাড়ি কিনলেন ওই প্রাথমিক শিক্ষক, সেই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের উপরমহলেও সম্প্রতি অভিযোগ যায়।

কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশাসন দেখে। তবে এটা ঠিক, নেতা হলাম আর গাড়ি চড়ে ঘুরলাম এটা মানা হবে না। আমরা নজর রাখছি। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন