কালিয়াচকে চলল গুলি, জখম বালিকা

মাস পাঁচেক শান্ত ছিল মালদহের কালিয়াচক। বর্ষশেষের রাতে ফের গুলির শব্দ চমকে উঠলেন আকন্দবেড়িয়ার বাসিন্দারা। গুলি লাগল যূথিকা মণ্ডল নামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর গায়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৮
Share:

চিকিৎসাধীন যূথিকা মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র

মাস পাঁচেক শান্ত ছিল মালদহের কালিয়াচক। বর্ষশেষের রাতে ফের গুলির শব্দ চমকে উঠলেন আকন্দবেড়িয়ার বাসিন্দারা। গুলি লাগল যূথিকা মণ্ডল নামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর গায়ে।

Advertisement

যূথিকার কাকা হিমেন মণ্ডলকে খুন করতেই দুষ্কৃতীরা ওই রাতে হামলা করেছিল বলে অভিযোগ। যূথিকার পিসেমশায় বিজেপির স্থানীয় নেতা রাম মণ্ডলকে দুর্গাপুজোর নবমীর সকালে বাড়িতে ঢুকে বোমা ছুড়ে খুন করা হয়। হিমেনবাবু ও তাঁর দাদা ছবিলাল মণ্ডলের অভিযোগ, রামবাবুকে খুন করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ছবিলালবাবুই যূথিকার বাবা। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল ওই দুষ্কৃতীরা। সে কারণেই ওরা ভাইকে খুন করতে এসেছিল। সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আমার মেয়ের কোমরে লাগে।’’ যূথিকাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকুল শেখ ও জাকির শেখ গ্রেফতার হওয়ার পরে কালিয়াচকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব কমে। তার আগে এই এলাকায় দুই গোষ্ঠীর গুলির লড়াইয়ে দুই বালক আহত হয়, এক ট্রাক চালক মারা যান। এখন তা অনেক শান্ত। তবে আকন্দবেড়িয়া এলাকা উত্তপ্ত ছিল বিধানসভা ভোটের পর থেকেই।

Advertisement

নির্বাচনে বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রে জয়ী হয় বিজেপি। আকন্দবেড়িয়া গ্রামে বিজেপিকে নেতৃত্ব দেন রামবাবুই। সেই কারণেই তাঁকে খুন করা হয় বলে দাবি পরিবারের। রামবাবু মারা যাওয়ার পরে ছবিলাল ও হিমেনবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতেরা সকলেই তৃণমূলের সমর্থক বলে বিজেপির দাবি। বিজেপির অভিযোগ, ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত ছিল। তাঁদের পুলিশ গ্রেফতার করেনি। সেই সঙ্গে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হিমেনবাবু ও ছবিলালবাবুর উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। ছবিলালবাবু বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ না তোলায় এ দিন হামলা করা হল।’’

যূথিকার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন রাতে খাওয়ার পর বাড়ির সামনে হাত ধুতে যান হিমেনবাবু। তাঁর কাছেই ছিলেন যূথিকা। তখনই চার দুষ্কৃতী এসে হিমেনবাবুর দিকে এক রাউন্ড গুলি চালায়। গুলি লাগে যূথিকার কোমরের ডান দিকে। গুলির শব্দে ছবিলালবাবু ও এলাকার লোকজন ছুটে গেলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।

বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক স্বাধীন সরকারের দাবি, ‘‘অভিযুক্তেরা তৃণমূল আশ্রিত বলেই পুলিশ কোন পদক্ষেপ করছে না।’’ তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরেই গোলমাল হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’ অভিযুক্তেরা তৃণমূল আশ্রিত বলেও তিনি মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ দলের সমর্থক হতেই পারেন। তবে পুলিশ তার কাজ করছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন