ধারাস্নানে পরিত্রাণ

অন্ধকার ফুঁড়ে লেলিহান শিখা তখন আকাশমুখী। বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা আগুন গ্রাস করছে পরের পর দোকান। জল ফুরিয়ে যাওয়ায় অসহায় দাঁড়িয়ে দমকল কর্মীরা। সব হারানোর আশঙ্কায় ব্যবসায়ীদের হাহাকার থমকে গেল হঠাৎ।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ

মালবাজার শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৭ ০২:১৮
Share:

অসহায়: পুড়ছে বাজার। দেখছেন ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব চিত্র

অন্ধকার ফুঁড়ে লেলিহান শিখা তখন আকাশমুখী। বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা আগুন গ্রাস করছে পরের পর দোকান। জল ফুরিয়ে যাওয়ায় অসহায় দাঁড়িয়ে দমকল কর্মীরা। সব হারানোর আশঙ্কায় ব্যবসায়ীদের হাহাকার থমকে গেল হঠাৎ। আকাশ চিরে চলে যাওয়া বিদ্যুতের ঝলক আর গর্জনে জানান দিয়ে বৃষ্টি নামল ঝাঁপিয়ে।

Advertisement

ঊর্ধ্বমুখ ব্যবসায়ীদের হাততালিতে মুখর হয়ে উঠল চারপাশ। মালবাজার দমকল কেন্দ্রের সতর্কবার্তা পেয়ে যতক্ষণে আবার ময়নাগুড়ি ও জলপাইগুড়ি থেকে দমকলের ইঞ্জিন এসেছে ততক্ষণে আগুন বৃষ্টির কব্জায়। না হলে কী হত তা আর ভাবতে চাইছেন না কেউ।

শুক্রবার শেষরাতে আগুন লাগে মালবাজার শহরের সবথেকে ব্যস্ততম এলাকা দৈনিক বাজারে। সাড়ে তিনটে নাগাদ একটি মনিহারি দোকানে প্রথম আগুন জ্বলতে দেখা যায়। হাওয়ার দাপটে মুহূর্তেই বাজারের একের পর এক মুদি দোকানের দখল নিতে শুরু করে আগুন। সরষের তেল, ঘিয়ের মত দাহ্য পদার্থ বোঝাই থাকায় তা বিধ্বংসী চেহারা নেয়। মালবাজার দমকল কেন্দ্রের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এলেও হাওয়ার দাপটে আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয় দমকল কর্মীদের। এরমধ্যে সমস্যা বাড়িয়ে জল ফুরিয়ে যায় একটি ইঞ্জিনের। পুরসভার জলের ট্যাঙ্কার এনে লড়াই শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ করেই প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ততক্ষণে আগুনের গ্রাসে।

Advertisement

আচমকাই শোনা যায় মেঘ গর্জন। তারপরেই টুপটাপ। আর তা টের পেয়েই ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ পাল, দশকর্মার দোকানের মালিক প্রশান্ত পালরা তখন গলা ছেড়ে ডাকছেন বৃষ্টিকে। পাল্লা দিয়ে জোর বাড়িয়ে চলে বৃষ্টিও। দীর্ঘ ৩০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা মালবাজার দমকলের ওসি কেবি সোনারের। তাঁর কথায়, ‘‘আগুনে ছাই হয়েছে ৭টি দোকান ও ২টি বাড়ি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৫টি দোকান। কিন্তু বৃষ্টি বাঁচিয়ে দিয়েছে শতাধিক দোকান ও বাড়িকে। আমার চাকরি জীবনে এমনটা দেখিনি।’’

ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ময়নাগুড়ি ও জলপাইগুড়ি থেকে দমকলের আরও দু’টি ইঞ্জিন পৌঁছায় দৈনিক বাজারে। ততক্ষণে অবশ্য দামাল আগুনকে নিভিয়ে দিয়ে বৃষ্টিই নায়ক। কী ভাবে আগুন লাগলো তা নিয়ে সন্দেহ সব মহলেই। ইতিমধ্যেই পুলিশকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে বলেছেন মালবাজারের চেয়ারম্যান স্বপন সাহা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন