ঈশ্বরচন্দ্রকে মালা দিতে নতুন সিঁড়ি

এমন ভাবে সিঁড়ি কেন করা হল, পরে তা পুরসভার আধিকারিকদের কাছে জানতেও চান মন্ত্রী। নিজের অসন্তোষের কথা তিনি মেয়র পারিষদ শঙ্করবাবুকেও জানিয়ে দেন। পার্ক এলাকায় উপস্থিত অনেকেই ‘হঠাৎ গজিয়ে’ ওঠা লোহার সিড়িটি দেখে অবাক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:১৫
Share:

মাল্যদানে মেয়র। নিজস্ব চিত্র

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দুশোতম জন্মজয়ন্তী পালন করতে গিয়ে বিতর্কে জড়াল শিলিগুড়ি পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ি শহরের চিলড্রেন্স পার্কে বিদ্যাসাগরের মূর্তিকে ঘিরে অনুষ্ঠানের জন্য রাতারাতি তৈরি করা হয় লোহার সিড়ি। মূর্তির গায়ে ঘেঁষেই তা বসানো হয়েছে। তা দিয়েই বিদ্যাসাগরের মূর্তির পাশে উঁচুতে উঠে মালা পরিয়ে আসেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) শঙ্কর ঘোষ-সহ অন্য অফিসারে। পরে সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে যান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব-সহ তৃণমূল কাউন্সিলর ও নেতানেত্রীরা। চিলড্রেন্স পার্কের মতো শিশুদের পার্কে যে ভাবে মূর্তির সঙ্গে বিশাল লোহার সিড়ি যুক্ত করা হয়েছে, তা দেখে ক্ষোভ জানান মন্ত্রী।

Advertisement

এমন ভাবে সিঁড়ি কেন করা হল, পরে তা পুরসভার আধিকারিকদের কাছে জানতেও চান মন্ত্রী। নিজের অসন্তোষের কথা তিনি মেয়র পারিষদ শঙ্করবাবুকেও জানিয়ে দেন। পার্ক এলাকায় উপস্থিত অনেকেই ‘হঠাৎ গজিয়ে’ ওঠা লোহার সিড়িটি দেখে অবাক। অনেককেই বলতে শোনা যায়, এখানে শিশুরা আসে, খেলাধূলা করে। সেখানে ওই বিরাট সিড়ি তৈরি করে পার্কের জায়গা নষ্ট করা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের মতো মনীষীর মূর্তির পাশে যা পুরোপুরি বেমানান। প্রয়োজনে বিদ্যাসাগরকে মালা পড়ানোর জন্য অস্থায়ী সিড়ির ব্যবস্থা করা যেত।

মন্ত্রী নিজে অবশ্য সিঁড়ি দিয়ে উঁচুতে না উঠে মূর্তির পাদদেশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি পুরসভার অফিসারদের বলেন, তাঁর নিজের বিধায়ক তহবিল থেকে যেন চাকা লাগানো সিঁড়ি কিনে নেয় পুরসভা। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘এক জন মনীষীর মূর্তির পাশে এমন সিড়ি কেউ বানায়! পুরোটার মধ্যেই চিন্তাভাবনার অভাব রয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয় কাউন্সিলর (গৌতমের স্ত্রী শুক্লাদেবী) পার্কের জন্য ১ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। সেটির কাজও করা হচ্ছে না।’’

Advertisement

যদিও পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বা পারিষদেরা তৃণমূলের বক্তব্যকে আমল দিতে নারাজ। মেয়র বলেছেন, ‘‘উনি আগে নিজের পদ, দল নিয়ে ভাবুন। পরে পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে ভাববেন।’’

তৃণমূল কাউন্সিলরেরা জানান, এর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের টাকায় বাঘা যতীন পার্ক সংস্কারের পর সেখানেই হুট করে পুরসভা ভাষা শহিদ মঞ্চ তৈরি করে বসে। এতে বাঘাযতীন পার্কের অনেকটা জায়গা নষ্ট হয়। এর বদলে অন্যত্র এলাকা বাছাই করে সুন্দর বাগান, ফোয়ারা ঘেরা ভাষা শহিদের মঞ্চ তৈরি করা যেত। যা শিলিগুড়ির শহরে একটি দর্শনীয় এলাকা হিসেবে তৈরি হতে পারত। তাঁরা বলছেন, এ বার চিলড্রেন্স পার্কে মেয়র, মেয়র পারিষদের বা অতিথিদের জন্য অদ্ভুত সিড়ি তৈরি করা হল। মূর্তিটিও তো বাম আমলেও বসানো হয়েছিল।

এ দিন দুপুরে মন্ত্রী পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর হাইস্কুল চত্বরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নবনির্মিত মূর্তির উন্মোচন করেন। স্কুল সূত্রের খবর, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষ্ণনগরের শিল্পী সুবীর পালকে দিয়েই মূর্তিটি তৈরি করানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন