লড়াই: মদনমোহন বাড়িতে চলছে দধিকাদা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
দধিকাদা খেলায় মাতল কোচবিহার। মঙ্গলবার কোচবিহারের মদনমোহন বাড়িতে ওই খেলায় অংশ নেন তিনজন। দেবোত্তরের কর্মী থেকে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে ওই খেলা দেখতে ছিল ব্যাপক উদ্দীপনা।
নজরকাড়া ভিড়ে মধ্যেই ‘ফল’ দখলে ধুন্ধুমার চলে তিন প্রতিযোগীর। দেবোত্তর সূত্রে জানা গিয়েছে্, কাদার মধ্যে ফল লুকিয়ে রাখা হয়। এ বারে নারকেল, মৌসম্বী, শশা, আপেল ও ন্যাসপাতি ফল কাদার মধ্যে রাখা হয়। ওই ফল কার কব্জায় থাকবে তা নিয়েই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। কোচবিহার সদরের মহকুমা শাসক তথা দেবোত্তরের সদস্য অরুন্ধুতী দে বলেন, “প্রাচীন রীতি মেনে খেলার আয়োজন হয়।”
দেবোত্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উপভোগ্য ওই লড়াইয়ে জয়- পরাজয়ের আবহ থাকলেও পুরো বিষয়টি হয় বন্ধুত্বপূর্ণ আবহে। খেলার পর কারও কাছেই হার-জিতের ব্যাপারটা ফ্যাক্টর হয়না। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় একসময় ওই খেলার দারুণ প্রচলন ছিল। এখনও কতটা জনপ্রিয় সেটা ফি বছরের মত এবারেও জন্মাষ্টমীর পরদিন বিশেষ পুজোর পর বিকেলে মন্দির চত্বরে উপচে পড়া ভিড় দেখেই স্পষ্ট হয়ে যায়। টানটান উত্তেজনার মধ্যে প্রায় এক ঘন্টা ধরে পাঁচ ফলের কটি কার দখলে থাকবে তার দারুণ লড়াই চলে।
দেবোত্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ বার যে তিন প্রতিযোগীর মধ্যে ওই ফল দখলের লড়াই হয় তাদের নাম অমল দাস, বাবুরাম দেউরি ও বিমল কার্জি। ওই প্রতিযোগীদের চোখে মুখেও ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের মেজাজ। তাদের একজন বলেন, লড়াইয়ের সময় জেদ চেপে যায়। তবু বন্ধুত্বের আবহটা থাকে। কোচবিহারের বাসিন্দা দেবব্রত চাকি বলেন, “জন্মাষ্টমীর পরদিন নন্দ উৎসবকে কেন্দ্র করে দধিকাদা খেলার প্রচলন উত্তরবঙ্গের পরম্পরা। এখন খেলার অভ্যাসটা কমেছে। তবে জনপ্রিয়তা রয়েছে।” দেবোত্তর সূত্রের খবর, শতবর্ষ প্রাচীন কোচবিহার মদনমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে দধিকাদা খেলা হয়ে আসছে। সময়ের প্রবাহে অনেক কিছু বদলালেও মন্দিরে ওই খেলার ধারাবাহিকতা কিন্তু জারি রয়েছে।