দায়িত্বে: জেলাশাসক কৌশিক সাহা ও মহকুমাশাসক সঞ্জয় পালের সঙ্গে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের নতুন সচিব সুপর্ণা বিশ্বাস। মঙ্গলবার, কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
মদনমোহন মন্দিরে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের দফতরে সচিবের দায়িত্ব পেলেন এক মহিলা আধিকারিক। মঙ্গলবার বোর্ডের সচিব হিসাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্বভার নিয়েছেন কোচবিহার সদর মহকুমা শাসকের দফতরে কর্মরত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুপর্ণা বিশ্বাস। তার পরে মন্দির চত্বরে সচিবের ঘরে বসেন তিনি। দেবোত্তর সূত্রের দাবি, সুর্পণাদেবীই বোর্ডের প্রথম মহিলা সচিব।
দেবোত্তর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানাচ্ছেন, ওই বোর্ডের সচিবের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক সাঙ্গে তাসি ডুকপা সম্প্রতি বদলি হয়েছেন। ফলে, সচিবের পদটি খালি হয়েছিল। দেবোত্তর কর্তারা ওই পদ পূরণে আলোচনা করেন। সেই সূত্রেই সুপর্ণা বিশ্বাসের নাম উঠে আসে। পুরোহিতদের সঙ্গেও পরে ওই ব্যাপারে আলোচনা করে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
বোর্ডের সভাপতি তথা কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “জেলার মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই ওই আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।” বোর্ডের সদস্য, কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “বোর্ড তৈরির পরে দীর্ঘদিন আধিকারিকেরা ওই সচিবের দায়িত্বে থাকেন। এ বার প্রথম মহিলা সচিব হলেন।”
সুপর্ণাদেবী অবশ্য বলেন, “একজন মহিলা বলে নয়, দায়িত্বশীল আধিকারিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে নিজের একশো শতাংশ দেব।” নতুন সচিবের হাতে গুরুত্বপূর্ণ চাবিও হস্তান্তর করেছেন সদর মহকুমাশাসক।
বোর্ড সূত্রেই জানা গিয়েছে, সচিব না হলেও মহিলারা অন্য দায়িত্বে ছিলেন। কয়েকবছর আগে জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র সভাপতি, অরুন্ধতী দে মহকুমাশাসক হিসেবে বোর্ডের সদস্য ছিলেন। গবেষকদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজতন্ত্রের অবসান হলে ১৯৫৬ সালে কোচবিহারের দেবালয় সমূহ ও দেবত্র সম্পতি রক্ষণাবেক্ষণে ওই বোর্ড গঠিত হয়। পরে সেটিই দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড নামে পরিচিত হয়। এক সময়ে পাঁচ জন সদস্য ছিলেন। বর্তমানে বোর্ডের সভাপতি তথা জেলাশাসক, পদাধিকার বলে সদস্য কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক ও প্রবীণ আইনজীবী প্রসেনজিৎ বর্মণ প্রমুখ রয়েছেন।
গবেষক দেবব্রত চাকি বলেন, “মদনমোহন মন্দিরে রাসচক্র ঘোরানোর নজিরও রয়েছে মহিলাদের। আগে মহারানি জিনা নারায়ণ, সম্প্রতি জেলাশাসক থাকাকালীন স্মারকি মহাপাত্র রাসচক্র ঘোরান। নতুন সচিবকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”