দার্জিলিং-কালিম্পঙে বরফ পড়ল? খোঁজ চলছে

লাগোয়া জলপাইগুড়ি-কোচবিহারও হাড় হিম করা বাতাসের ছোবল সামাল দিতে সূর্যাস্তের আগেই প্রায় ঘরবন্দি। দার্জিলিং, কালিম্পঙের পাহাড়ি এলাকার জনজীবন পুরোপুরি হিমশীতল। লাভায় দু’দিন থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ১-২ ডিগ্রিও নামছে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৬
Share:

আবছা: কোচবিহারে কুয়াশা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

বরফ পড়ছে শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। তাতে কী! সেই বরফ ছুঁয়ে আসা কনকনে বাতাসের ধাক্কায় গোটা শিলিগুড়িই যেন লেপ-কম্বলের তলায় ঢুকে পড়তে চাইছে।

Advertisement

লাগোয়া জলপাইগুড়ি-কোচবিহারও হাড় হিম করা বাতাসের ছোবল সামাল দিতে সূর্যাস্তের আগেই প্রায় ঘরবন্দি। দার্জিলিং, কালিম্পঙের পাহাড়ি এলাকার জনজীবন পুরোপুরি হিমশীতল। লাভায় দু’দিন থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ১-২ ডিগ্রিও নামছে।

লাভার বাসিন্দা ফুদেন লেপচা, দাওয়া লামা, অনীশ শর্মার মতো অনেকেই বছর দশেক আগের তুষারপাতের পুনরাবৃত্তির আশায় রয়েছেন। এমনকী, জানুয়ারির শেষেও শীতের দাপটে জবুথবু হলেও যদি টাইগার হিল, ঘুম, লাভা বরফে ঢাকে তা হলে যাওয়ার জন্য কোমর বাঁধছে সমতলও। কোচবিহারের পুলিশ কর্তা থেকে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের শীর্ষ অফিসার, সকলেই যোগাযোগ রাখছেন। খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবধি ‘দার্জিলিং-কালিম্পঙে কি বরফ পড়বে’ কি না তা খোঁজ নিচ্ছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে অনেকে বরফ পড়ার ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন। তাই আগাম খবরাখবর নিয়ে রাখতে হচ্ছে। কারণ, শীত শেষ বাজারে চালিয়ে খেলছে।’’

Advertisement

বস্তুত, জানুয়ারির শেষে যা তাপমাত্রা উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে সাধারণত থাকার কথা গত দুদিনে তার চেয়ে গড়ে ৯ ডিগ্রি কমেছে। সিকিমের কিছু এলাকায় বৃষ্টিও হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গ থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ বিস্তৃত রয়েছে। তার জেরেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহারে।

রোদ থাকলেও কনকনে ভাব রয়েছে মালদহ, দুই দিনাজপুরেও। তুলনায় ডুয়ার্সের চা বলয়ে দিনে খানিকটা গরম অনুভূত হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিশেষজ্ঞ রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘সিকিম-দার্জিলিঙের উঁচু এলাকায় তুষারপাতের কারণেই হাড় কাঁপানো বাতাস বইছে সমতলে। এটা আরও দু-তিন দিন চলবে। দিনে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও সন্ধ্যার পরে হু হু করে পারদ নামবে।’’

দার্জিলিঙের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির থেকেও কমে গিয়েছিল এই মরসুমে বেশ কয়েকবার। এবার লাভার তাপমাত্রাও পৌঁছলো মাইনাস দুই-এ। শুক্রবার গভীর রাতে লাভার তাপমাত্রা শূন্যের নীচে চলে যায়। লাগোয়া উত্তর সিকিমে প্রবল তুষারপাত হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখার টানে জলীয় বাষ্প ছুটে আসছে। বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায় সমতলে ঘন কুয়াশা হচ্ছে। উঁচু পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাত চলছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমবে।’’

হিমশীতল বাতাস, কুয়াশার কারণে সন্ধ্যার পরে যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। হরিয়ানা থেকে পম্য নিয়ে নাগাল্যান্ডে য়াওয়ার পথে তাই মাটিগাড়ায় দাঁড়িয়ে পড়েছেন সুখবিন্দর সিং, রাকেশ চহ্বানের মতো অনেকে চালকই। রাকেশ বললেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে গাড়ি চালাতে অসুবিধে হচ্ছে। তাই শুধু দিনেই চালাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন