ঠাকুরনগর থেকে শুরু করে সাহুডাঙ্গি, গোড়া মোড়ে একাধিক দোকানে বেআইনিভাবে মদ পাওয়া যায় বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
মদের নেশাই গোড়া মোড়ের নৃশংস খুনের ঘটনার মূল কারণ কিনা সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রোজই মদ খেয়ে এসে বাড়িতে ঝামেলা করতেন পিন্টু। জুয়া খেলা নিয়েও অশান্তি হত বলে তাঁদের দাবি। এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবারে প্রায়শই এরকম ঝামেলা হয় বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁদের আরও দাবি, ওই এলাকায় বেআইনি মদের দোকান রয়েছে, বসে জুয়ার আসরও। সেই দোকানগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশের দাবি, এনজেপি এলাকার বেআইনি মদের দোকানের বিরুদ্ধে তারা প্রায়শই অভিযান চালান।
ঠাকুরনগর থেকে শুরু করে সাহুডাঙ্গি, গোড়া মোড়ে একাধিক দোকানে বেআইনিভাবে মদ পাওয়া যায় বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দা রবি রায়ের দাবি, ‘‘একটু বেশি দাম দিলেই অনায়াসে মদ মেলে কিছু কিছু চায়ের দোকান, পানের দোকানে।’’
পাশাপাশি রোজ রাতে এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জুয়ার ঠেক বসে বলেও অভিযোগ। পিন্টু মদ এবং জুয়া দুটোতেই আসক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত নেশার প্রভাবে ‘প্যাথলজিকাল জেলাসি’ এবং ‘ডিলিউশনাল ডিসঅর্ডার’ নামে দু’টি উপসর্গ দেখা দেয়।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মনোবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক শান্তনু দে বলেন, ‘‘নেশার ফল হিসেবে সন্দেহ করার প্রবণতা তৈরি হয়। তা একটা সময় মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। নেশায় আসক্তদের মধ্যে জেগে ওঠে পাশবিক প্রবৃত্তি।’’ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে শিলিগুড়ি শহর এবং শহর লাগোয়া এলাকায় এরকম রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে যুবক এবং মাঝবয়সীরা এই রোগের শিকার হচ্ছেন বেশি করে।
মদের রমরমার জন্য সমাজের একটি অংশকেই দায়ী করছেন সমাজবিদরা। তাঁদের দাবি, যে কোনও অনুষ্ঠানে মদ খাওয়ার প্রবণতা এবং রীতি এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে এখন রোজ মদ খাওয়া অনেকে ক্ষতিকারক বলে ভাবছেন না।
ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন থানা এলাকায় বেআইনি মদ্যপানের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। এর মধ্যে বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কোনও এলাকায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও আমরা তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেই।’’