কোর্টের রায়: কোনও বাজি নয়
Crackers

Kali Puja 2021: নির্দেশ কার্যকর হবে তো, ধন্ধ

শব্দবাজি নিষিদ্ধ ঘোষণার পরেও দেওয়ালি, কালীপুজোয় দেদার বাজি ফেটেছে। জেলাগুলির একাংশে পুলিশ নজরদারি চালালেও প্রয়োজনের তুলনায় তা কিছুই নয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৪
Share:

নিষেধাজ্ঞা: শুক্রবার হাই কোর্টের রায়ের পরে গুদামে তুলে রাখা হচ্ছে বাজি। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিনোদ দাস।

আদালত সমস্ত ধরনের বাজি নিষিদ্ধ করায় খুশি চিকিৎসক, পরিবেশপ্রেমী এবং সচেতন বাসিন্দারা সকলেই। কোভিড আক্রান্ত বা কোভিড থেকে যাঁরা সেরে উঠেছেন, তাঁরাও এই পদক্ষেপে আশার আলো দেখছেন। তবে এই নির্দেশকে কার্যকর করতে পুলিশ-প্রশাসন কতটা পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গিয়েছে। কেন না অতীত অভিজ্ঞতা এ ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। দেখা গিয়েছে, শব্দবাজি নিষিদ্ধ ঘোষণার পরেও দেওয়ালি, কালীপুজোয় দেদার বাজি ফেটেছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির একাংশে পুলিশ নজরদারি চালালেও প্রয়োজনের তুলনায় তা কিছুই নয়।

Advertisement

শুক্রবার হাই কোর্টের রায়ের পরে যদিও মালদহ থেকে কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি বিভিন্ন জেলার পুলিশের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার, জলপাইগুড়ি পুলিশের ডিএসপি (সদর) সমীর পাল, মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা— সকলেই জানান, প্রয়োজন মতো তাঁরা পদক্ষেপ নিতে শুরু করছেন। শিলিগুড়িতে বাজির বড় বাজার রয়েছে। অনেক সময় এখান থেকে অন্য জেলার ব্যবসায়ীরাও কেনেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘বাজারগুলিতে বাজি বিক্রি বন্ধ করতে অভিযান চলবে। বাজি কেউ পোড়াচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে কড়া নজরদারি চলবে। বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে পুলিশ চটজলদি ব্যবস্থা নেবে।’’ কিন্তু পুলিশের বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সেই সক্রিয়তা এবং পরিকাঠামো যথাযথ রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংস্থা।

শিলিগুড়িতে ‘ফাইট করোনা’র তরফে অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের পর এ বার পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেকেই ইতিমধ্যেই বাজি কিনে রেখেছেন। সে সব যেন পোড়ানো না হয়, দেখতে হবে।’’ জলপাইগুড়ি ‘সায়েন্স অ্যান্ড নেচার’ ক্লাবের সম্পাদক রাজা রাউতের কথায়, ‘‘বাজি পোড়ানো ও মজুত করা হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতিতে বাজির ধোঁয়ায় খুবই ক্ষতি হবে। প্রশাসনের উচিত কড়া পদক্ষেপ ও মাইকিং করে এখনই সচেতন করা।’’

Advertisement

বাজির কারবারিরা অবশ্য এতে কিছুটা বিপাকে। শিলিগুড়ির লিউসুপাখুরি বাজি কারখানার মালিক জয়ন্ত সিংহ রায় জানান, এই পরিস্থিতির কথা ভেবেই বাজি তৈরি তিনি বন্ধ রেখেছেন। যাঁরা বাজি বানিয়েছিলেন, তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মালদহের বাজি ব্যবসায়ী সঞ্জয় সাহা জানান, আদালত বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করায় মজুদ করা প্রচুর বাজি নিয়ে তাঁরা এখন দিশাহারা।

সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন কোচবিহারের বিপ্লব মোহন্ত। তিনি বলেন, ‘‘বাজির ধোঁয়া আমার মতো লোকজনের পক্ষে ভয়ঙ্কর বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।’’ করোনার আক্রান্ত হয়েছিলেন শিলিগুড়ি কোভিড কেয়ার নেট ওয়ার্কের চিকিৎসক অনির্বাণ রায়। তিনি বলেন, ‘‘কোভিড থেকে সেরে উঠেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে। শুধু আমার নয়, অনেকেরই সেটা হচ্ছে। বাচ্চারাও নানা ভাইরাস ঘটিত জ্বর, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে। সকলকেই সেটা বুঝতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন