রায়গঞ্জ পুরসভা

রায়গঞ্জে প্রশাসক, ক্ষোভ মোহিতদের

রায়গঞ্জ পুরসভার দায়িত্ব নিল প্রশাসক। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের নির্দেশে শুক্রবার দুপুরে পুরসভায় গিয়ে প্রশাসকের দায়িত্ব নেন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেন্ডুপ নামগিয়েল শেরপা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৩
Share:

রায়গঞ্জ পুরসভায় প্রশাসক বসার বিরুদ্ধে ধিক্কার মিছিল কংগ্রেসের। —নিজস্ব চিত্র।

রায়গঞ্জ পুরসভার দায়িত্ব নিল প্রশাসক। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের নির্দেশে শুক্রবার দুপুরে পুরসভায় গিয়ে প্রশাসকের দায়িত্ব নেন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেন্ডুপ নামগিয়েল শেরপা। তাঁকে সরকারিভাবে পুরসভার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত পুরসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। গত বৃহস্পতিবার কংগ্রেস পরিচালিত ওই পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। জেলাশাসক রণধীর কুমার বলেন, ‘‘নির্বাচিত নতুন বোর্ড না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক সমস্ত নাগরিক পরিষেবার কাজ পরিচালনা করবেন।’’

Advertisement

এ দিকে, পুরসভায় প্রশাসক নিযুক্ত হওয়ার পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে আন্দোলন নেমেছে কংগ্রেস। এ দিন বিকালে জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিতবাবু, দলের দুই জেলা সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সন্দীপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে দলের কয়েকশো নেতা কর্মী রায়গঞ্জের বিদ্রোহীমোড় থেকে শিলিগুড়িমোড় পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল করেন। মোহিতবাবু বলেন, ‘‘পুরসভা নির্বাচনে হারের আশঙ্কায় তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার শাসক দলকে ঘর গোছানোর সুবিধা করে দিতে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়েছে। পুর এলাকার নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হলে দল চুপ করে বসে থাকবে না।’’

তাঁর দাবি, পুর এলাকায় তৃণমূলকে শক্তিশালী হওয়ার সময় করে দিতে রাজ্য সরকার সম্প্রতি প্রশাসকের মেয়াদ ছয় মাস থেকে বাড়িয়ে একবছর করেছে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার কংগ্রেস পরিচালিত কালিয়াগঞ্জ পুরসভার সাত কাউন্সিলর শাসক দলে যোগ দেওয়ায় ওই পুরসভার দখল নিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

এ দিন মোহিতবাবু দাবি করেন, ‘‘কোনও প্রলোভনে পা দিয়ে আমি-সহ কংগ্রেসের কোনও কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেবেন না বলে শপথ নিয়েছেন। নির্বাচন যখনই হোক, উন্নয়ন বজায় রাখতে বাসিন্দারা কংগ্রেসকেই সমর্থন করবেন।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘দল প্রশাসনিক ও সরকারি কাজে হস্তক্ষেপ করে না। রাজ্য সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নমূলক কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে রায়গঞ্জবাসী ভবিষ্যতে তৃণমূলকেই পুরসভা উপহার দেবেন।’

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট করে পুরসভা নির্বাচনে লড়ে ২৩টি ওয়ার্ড দখল করে। কংগ্রেস ১৮টি ও তৃণমূল ৫টি ওয়ার্ড দখল নেয়।

বামেদের দখলে যায় ২টি ওয়ার্ড। পরবর্তীতে কংগ্রেস তৃণমূলকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ না ছাড়ায় তৃণমূল পুরসভার বিরোধী দলের আসনে বসে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশন আসন পুনর্বিন্যাস করে পুরসভার দুটি ওয়ার্ড বাড়িয়ে ২৭টি ওয়ার্ড করে। তৃণমূলের দখলে থাকা একাধিক ওয়ার্ড সংরক্ষণ করা হয়। তার জেরে আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ায় আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে তৃণমূল। কংগ্রেসের তরফেও গত ২৮ জুন মোহিতবাবু সঠিক সময়ে নির্বাচন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। এরপরেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিধানসভায় রায়গঞ্জ পুরসভার পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন