যত কাণ্ড রায়গঞ্জে

বাড়িতে ঢুকে খুনের চেষ্টা, ফের গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী

ব্যবসায়ী প্রকাশের বাড়ি রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গি এলাকায়। এটিকে শহরের প্রাণকেন্দ্রই বলা যায়। এখান থেকে রায়গঞ্জ থানার দুরত্ব প্রায় ৫০০ মিটার এবং পুরসভার অফিস ১০০ মিটার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:২৫
Share:

হামলা: গুলিবিদ্ধ প্রকাশ আগরওয়াল। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

বাড়িতে ঢুকে এক ব্যবসায়ীর উপর দুষ্কৃতী হামলা রায়গঞ্জে। রবিবার সকালে শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারডাঙ্গি এলাকার ঘটনা। ওই ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ আগরওয়াল। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গুলি করে খুনের চেষ্টা করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ছুটির সকালে শহরে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

Advertisement

ওই ব্যবসায়ী প্রকাশের বাড়ি রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গি এলাকায়। এটিকে শহরের প্রাণকেন্দ্রই বলা যায়। এখান থেকে রায়গঞ্জ থানার দুরত্ব প্রায় ৫০০ মিটার এবং পুরসভার অফিস ১০০ মিটার। ২০০ মিটার দূরেই শহরের নামী এক হোটেল। প্রকাশের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ ওই হামলা হয়। এ দিন সকালে প্রকাশের বাবা শ্যামসুন্দর পথের ষাঁড়দের খাবার দেওয়ার জন্য বাড়ির প্রধান গেটটি খোলেন। তখনই জনা-ছয়েক দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। এরপর তারা প্রকাশের খোঁজ করে। এসব দেখে প্রকাশের মা লীলাদেবী ও বোন কিরণ চিৎকার করে প্রকাশকে ডাকেন। প্রকাশ ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় আসতেই দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর হাতে ও ঘাড়ে কোপাতে শুরু করে। এরপর তাঁর গলার নীচে দুষ্কৃতীরা গুলি করে বলেও অভিযোগ। এরপর দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করতেই প্রকাশ রক্তাক্ত অবস্থাতেই ছুটে রাস্তায় তাদের ধরার চেষ্টা করেন। তবে তিনি রাস্তাতেই পড়ে যান। দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।

পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ধারালো অস্ত্রের কোপে প্রকাশের গলার নীচের অংশে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। দুষ্কৃতীরা তাঁর দুই হাতে ও ঘাড়ে আঘাত করেছে। ঘটনার পরেই প্রকাশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার জানান, দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীর গলার নীচে গুলি করেছে, নাকি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। কুমারডাঙ্গি এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। পুলিশের দাবি, ছ’জনের মধ্যে তিনজন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসেছিল। হামলার পর তারা বাইকেই সুভাষগঞ্জের দিকে পালিয়ে যায়। বাকি তিন দুষ্কৃতী দৌড়ে রেললাইন ধরে বিহারের দিকে পালিয়ে যায়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শহরের মহাত্মা গাঁধী রোড লাগোয়া এলাকায় প্রকাশের অলঙ্কারের দোকান রয়েছে। গত প্রায় সাত বছর ধরে ওই দোকানটি বন্ধ। এরপর থেকে তিনি বাড়িতেই পোশাকের ব্যবসা করেন। পাশাপাশি, তিনি সুদের কারবারও করেন। জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে আগের পক্ষের স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে প্রকাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বেশ কিছু দিন জেল হেফাজতে থাকার পর তিনি জামিনে ছাড়া পান। পুলিশ জানিয়েছে, সুদের ব্যবসার টাকার লেনদেন নিয়ে কোনও গোলমাল বা আগের পক্ষের স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ নিয়ে বিবাদের জেরে এই খুন হতে পারে। প্রকাশের মা ও বোন জানান, তাঁরা দুষ্কৃতীদের চিনতে পারেননি।

পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা না থাকলে দিনের আলোয় থানা থেকে ৫০০ মিটার দূরে শহরের প্রাণকেন্দ্রে এসে দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালানোর সাহস পেত না।’’ তবে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন