ফাঁকা: ধর্মঘটে দোকান বন্ধ কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
বছর দশেকের পুরকান আচমকাই কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে ওঠে, “মেরে চাচা কো কিউ মার দিয়া। সব কো ফাঁসি চাহিয়ে। পুলিশ কিউ নেহি পাকাড় রহি?”
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিধায়ক মিহির গোস্বামী হতচকিত হয়ে যান। পড়ে জড়িয়ে ধরেন পুরকানকে। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানিয়েছি। সবাই গ্রেফতার হবে।” পরিবারের অন্য সদস্যরাও অভিযোগ করেন, আসলে অভিযুক্তদের বাঁচিয়ে দিতেই কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মাজিদ আনসারির আত্মীয় আব্দুল রশিদ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এ ভাবে মামলা থিতিয়ে যাবে। সবাই পার পেয়ে যাবে। এই চেষ্টাই করা হবে।”
আসলে কারা এই অভিযুক্তরা? কেনই বা উঠছে তাঁদের আড়াল করার অভিযোগ? তাঁর পরিবারের পরিবারের অভিযোগ, কোচবিহার ১ নম্বর কালিঘাট রোডের অভিজিৎ বর্মন, নতুনপল্লির সায়ন হক ওরফে লোটাস, রেল কলোনির সঞ্জিৎ সাহানি, রেলঘুমটির নবাব হেদায়াতুল্লা, মসজিদপাড়ার আনোয়ার হোসেন, ধলুয়াবাড়ির চ্যানিরুল হল, গাধী কলোনির রণজিৎ কুণ্ডু ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এদের সবার নামই অভিযোগে রয়েছে এবং সকলেই পলাতক।
মাজিদের পরিজনদের অভিযোগ, প্রত্যেককেই তৃণমূলের কোচবিহার জেলা কোর কমিটির সদস্য মুন্না খানের সঙ্গে দেখা গিয়েছে নানা সময়। এমনকী, মুন্না খানের বিরুদ্ধে খুনে ষড়যন্ত্র ও অভিযুক্তদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও দায়ের হয়েছে থানায়। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মুন্না খান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিত। মুন্না খান অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তসলিম আনসারি বলেন, “পুলিশ জানে না অপরাধীরা কোথায় এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। সব জেনেও কোনও চাপে পুলিশ চুপ করে আছে। আমরা চাই প্রত্যেককে পুলিশ ধরুক।” পুলিশ অবশ্য অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ মানতে চাননি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “কাউকে আড়াল করার ব্যাপার নেই। ওই ঘটনায় একজন অভিযুক্ত পার পাবে না। সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।”