বিধানসভা নির্বাচনের ফলে নোটায় দেওয়া ভোটের সংখ্যা দেখে চিন্তায় ডান-বাম সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই। ইসলামপুর-সহ পাশের বিধানসভা এলাকাগুলিতে ভোটের হার কখনও রাজনৈতিক দলগুলির চেয়েও বেশি। তা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক জল্পনা। ইসলামপুর, চোপড়া, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর—মোট চারটি বিধানসভা এলাকার গণনা কেন্দ্র ছিল ইসলামপুর। তার দু’টিতে তৃণমূল, একটিতে জোট সমর্থিত ফরওয়ার্ড ব্লক ও অপরটিতে কংগ্রেস জিতলেও নোটায় পড়া ভোটের সংখ্যা বিধানসভা কেন্দ্র প্রতি দু’হাজারের কম-বেশি।
ইসলামপুরে নোটায় ভোট পড়েছে ১৯৪২টি, চোপড়ায় সংখ্যাটা ২৬৫৫, চাকুলিয়ায় ১৬১২ ও গোয়ালপোখরে ১৫৫৭টি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, অনেক এলাকায় নোটায় যা ভোট পড়েছে, অনেক রাজনৈতিক দলও সে ভোট পায়নি। ইসলামপুরের বিষয়টি দেখলেই নজরে পড়ে, বাম সমর্থিত জেডিইউ প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ১৫১৭টি, গোঁজ প্রার্থী তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার আব্দুল করিম চৌধুরীর ভাইপো আলতামাস চৌধুরী ভোট পেয়েছেন ১০৬৭টি। কোনও কোনও দলীয় প্রার্থী আরও কম ভোট পেয়েছেন। শুধু ইসলামপুরই নয় চোপড়াতেও নোটায় ভোট পড়েছে ২৬৫৫টি। যেখানে সদ্য বিজেপি ত্যাগ করে নির্দল থেকে ভোট দাঁড়িয়ে তাবিবুর রহমান ভোট পেয়েছেন ২৬৮১। কাজেই নোটা নিয়ে রাজনৈতিক কারণ খোঁজার চেষ্টা চালিয়েছেন অনেকেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, এলাকায় অনেকেই কট্টর সিপিএম কিংবা কংগ্রেস কর্মী রয়েছেন। তাঁরাই হয়তো ওই ভোট দিয়েছেন।
অনেকেরই দাবি, প্রার্থী পছন্দ নাও হতে পারে এলাকার ভোটারদের। কাজেই নোটায় ভোট পড়াটা অস্বাভিক কিছু নয়। ইসলামপুরের বাসিন্দা রাজা বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রার্থী সবার মন মতো হবে তার মানে নেই। নোটার সুবিধা দিয়েই ভালই করেছে। গ্রামের দিকেও শোনা যায় যুবকদের মধ্যে নোটা নিয়েই আলোচনা হচ্ছে।’’ যদিও রাজনৈতিক দলের নেতারা বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন নোটার ভোট বেশির বিষয়ে। সিটুর উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সদস্য তথা সিপিএম নেতা বিকাশ দাস বলেন, ‘‘একটি অংশ অতি উত্সাহী মানুষ সেখানে ভোট দিয়েছেন। আবার কিছু কট্টরপন্থী মানুষও সেখানে ভোট দিয়েছেন। তবে যাই হোক না কেন, বিষয়টি বেশ চিন্তার।’’ অপর দিকে, কংগ্রেসের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হুসেন বলেন, ‘‘মানুষকে বিশ্বাস জোগাতে পারিনি। সেই কারণে হয়তো কিছু মানুষ নোটায় ভোট দিয়েছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ভোটের বিষয়ে মানুষ সচেতন। যাঁরা সেখানে ভোট দিয়েছেন, চিন্তা ভাবনা করেই দিয়েছেন।’’