চালকের কানে ফোন, যাত্রীরাই থামালেন বাস

গোঁসাইহাটের কাছাকাছি আসতেই বেজে ওঠে বাসের এক কর্মীর ফোন। তা রিসিভ করে তিনি তা তুলে দেন চালকের হাতে। মোবাইলে কথা বলতে বলতেই বাস চালাতে থাকেন চালক।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাস চালাতে চালাতেই মেজাজে কথা বলে যাচ্ছিলেন চালক। কিছু ক্ষণ লক্ষ করে প্রতিবাদ শুরু করেন যাত্রীরাই। অবশেষে ফোন রেখে কাঁচুমাচু হয়ে রাস্তার ধারে বাস দাঁড় করিয়ে ভুল স্বীকার করলেন চালক। এমনটা আর হবে না আশ্বাস দিলে ফের চলল গাড়ি। রবিবার সকালে এমনই ঘটনার নজির তৈরি হল বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রাম শীতলখুচির রাস্তায়।

Advertisement

চালক কাকুতি-মিনতি করায় শেষ পর্যন্ত বিষয়টি পরে আর পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়নি। ওই গাড়ির যাত্রী ছিলেন কোচবিহারের এক বাসিন্দা অর্জুন দাস। তিনি বলেন, “দিন কয়েক আগেই এতবড় দুর্ঘটনা হয়েছে ফারাক্কায়। তার পরেও অনেকে সতর্ক নন। একটু ঝুঁকি নিতে গিয়ে কতবড় ক্ষতি হতে পারে ভেবেই আমরা প্রতিবাদ করেছি।”

ঠিক কী হয়েছিল ওই দিন? যাত্রীরা জানান, তখন সকাল ১১টা। শীতলখুচি বাস স্ট্যান্ড থেকে একটি বাস রওনা হয় মাথভাঙার দিকে। ছোট ওই গাড়িতে সব মিলিয়ে তেরো জন যাত্রী ছিলেন। তার মধ্যে চার জন ছাত্রী ছিল। টিউশন করে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। গোঁসাইহাটের কাছাকাছি আসতেই বেজে ওঠে বাসের এক কর্মীর ফোন। তা রিসিভ করে তিনি তা তুলে দেন চালকের হাতে। মোবাইলে কথা বলতে বলতেই বাস চালাতে থাকেন চালক।

Advertisement

যাত্রীরা জানান, গাড়ি রিজার্ভ করা নিয়ে ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে দরাদরি করছিলেন চালক। অন্তত চল্লিশ সেকেন্ড এমনটা চলার পরে এক যাত্রী প্রতিবাদ করেন। এক এক করে গাড়ির সকলেই চিৎকার শুরু করেন। ঘাবড়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামান চালক। যাত্রীরা তাঁকে চেপে ধরেন। কেন তিনি বেআইনি ভাবে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তা জানতে চান তাঁরা। বাসের চালকের অবশ্য দাবি, বাড়ির লোক ফোন করায় তিনি ভুল করে কল রিসিভ করেছিলেন। ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আমার নাম কাউকে বলবেন না। বিপদে পড়ে যাব।”

কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “আমাদের নজরদারি রয়েছে চারদিকে। তেমন দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

জেলা পুলিশের এক কর্তাদের অনেকেই জানান, শহরে এবং জাতীয় সড়কে তাঁরা নিয়মিত নজরদারি রাখেন। গ্রামের রাস্তায় অনেক সময়ই তা হয়ে ওঠে না। সেই সুযোগ নিচ্ছেন অনেকে। ওই ঘটনার কথা জানান মাথাভাঙা মহকুমার আইএনটিটিইউসির নেতা আলিজার রহমানের কাছে। তিনি ওই লাইনে চলা ছোট গাড়ি ইউনিয়নেরও নেতা। তিনি বলেন, “এমন একটি খবর আমাদের কাছেও পৌঁছেছে। আমরা এই ব্যাপারে সমস্ত চালককে সতর্ক করে দিয়েছি। এমনটা হলে প্রশাসন প্রশাসনের মতো ব্যবস্থা নেবে।” কোচবিহার জেলা আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি প্রাণেশ ধর বলেন, “গাড়ি চালানোর সময় কথা না বলা নিয়ে প্রত্যেককে সতর্ক করা হয়েছে। এমনটা মেনে নেওয়া হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন