দিদা পুতুল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
অগ্নিদগ্ধ মা ভর্তি বার্ন ওয়ার্ডে। মায়ের পাশেই এক মাস ৯ দিনের শিশুপুত্রকে রেখে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন দিদা। ফিরে এসে শিশুটিকে আর দেখতে পাননি। শিশুটিকে চুরি করা হয়েছে বলে দিদিমার দাবি।
শনিবার এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হায়াওপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল আরও একবার। পাশাপাশি, বার্ন ওয়ার্ডের মতো ওয়ার্ডে কিভাবে এক মাস ৯ দিনের শিশুপুত্রকে রাখা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে, ঘটনা জানাজানি হয়েই হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ ওয়ার্ডে যান। শিশুটির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে এবং বার্ন ওয়ার্ডের অন্য রোগীদের পরিজনদের সঙ্গেও কথা বলেন। এই শিশুচুরি কাণ্ডে হাসপাতালের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে এবং পরিবার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেও পুলিশকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জগবন্ধুটোলা গ্রামের বাসিন্দা রতন মণ্ডল। পেশায় তিনি গাড়ি চালক। কর্মসূত্রে জেলার বাইরে তিনি থাকেন। তাঁর স্ত্রী ২২ বছরের সাঞ্জু মণ্ডল। তাঁদের একমাত্র শিশু সন্তানের বয়স এক মাস ৯ দিন। এখনও নামকরণ হয়নি সেই শিশুর।
গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে উনুনে রান্না করার সময় অগ্নিদগ্ধ হন সাঞ্জুদেবী। শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে যায়। প্রথমে তাঁকে রতুয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেদিনই তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এই হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে তিনি ভর্তি আছেন। সঙ্গে রয়েছেন মা পুতুল মণ্ডল।
পুতুল বলেন, ‘‘এ দিন দুপুরে মেয়ের শয্যার পাশেই শুয়ে ছিল নাতি। সে সময় অপরিচিত এক মহিলা এসে আমার সঙ্গে মেয়ের কী হয়েছে, তা নিয়ে গল্প করে। এরপর ওই মহিলা ওয়ার্ড থেকে চলেও যায়। আমি বাথরুমে গিয়েছিলাম। কিছু ক্ষণের মধ্যে ফিরে এসে দেখি নাতি শয্যায় নেই। খোঁজ শুরু করলে পাশের শয্যায় থাকা রোগীর পরিজনেরা জানায় যে মহিলার সঙ্গে আমি কথা বলেছিলাম সেই শিশুটিকে নিয়ে গেছে। তারপরেই বাইরে চিৎকার শুরু করি। কিন্তু নাতির খোঁজ নেই।’’ সুপার বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটি গড়া হবে।’’ ইংরেজবাজার থানার আইসি জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’