কার্শিয়াঙের মহকুমা শাসক বিপুলকুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্বামীকে মানসিক অত্যাচার করার অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের স্ত্রী। বুধবার তিনি কার্শিয়াং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নাম ত্রিদিব সর। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, গত ১৮ এপ্রিল থেকে মহকুমা শাসক তাঁর স্বামীর উপরে মানসিক নির্যাতন করেছেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ দিন অজ্ঞানও হয়ে যান। তার পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ত্রিদিববাবু মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করার পরেই অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এর পরেই মহকুমা শাসকের দফতরের একাংশ কর্মী ক্ষোভেও ফেটে পড়েন। মহকুমা শাসককে সরানোর দাবিতে তাঁরা দফতরে বিক্ষোভও দেখান। ঘটনার খবর পেয়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে কেউ দোষী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এখন সুস্থ আছেন। ওঁর রক্তচাপ অত্যধিক বেড়ে গিয়েছিল বলে শুনেছি। চিকিৎসার বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশে অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান, মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অত্যধিক কাজের চাপ, উচ্চ রক্তচাপ পাওয়া যাচ্ছে। জেলাশাসককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ত্রিদিববাবুর স্ত্রী রঞ্জনা সরের অভিযোগ, ‘‘স্বামীর উপর মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন মহকুমা শাসক। কাজ করতে দিয়ে পরে বলছেন, কেন এই কাজ করেছেন। আমি তো এ সব করতে বলিনি। ফের অন্য কাজের কথা বলছেন। গত ১৮ এপ্রিল থেকে তা মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন উনি এমন করছেন, জানি না। স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই পুলিশে অভিযোগ করেছি।’’ তিনি জানান, এদিন হাসপাতালে গেলে উনি বলেছেন, মারাত্মক অবস্থা চলছে। উনি আর সইতে পারছেন না। এদিন অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারান। প্রথমে কার্শিয়াং হাসপাতালে পরে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ত্রিদিববাবুকে ভর্তি করানো হয়েছে।
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পাশে দাঁড়িয়ে দফতরের কয়েকজন কর্মী জানান, এই মহকুমা শাসকে তাঁরাও চান না। তাঁরা বলেন, ‘‘ওঁকে বদলি করতে হবে। আমরা ধর্মঘটের পথে যাচ্ছি। এ দিন ত্রিদিববাবু অসুস্থ হয়ে পড়তেই মহকুমা শাসক বাড়ি চলে যান। কিছুই ব্যবস্থা নেননি। উনি এই মহকুমা মানুষের জন্যও কিছু করছেন না। তাই ওঁর চলে যাওয়াই ভাল।’’ গোটা বিষয়টি নিয়ে মহকুমা শাসক বিপুলবাবু কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।