অসুস্থ ১৫০, চিকিৎসা মেঝেয়

চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, খাবার থেকে বিষক্রিয়াতেই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মারাত্মক পেট খারাপ, বমি, মাথাঘোরার উপসর্গ রয়েছে।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

বাঙিটোলা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫৭
Share:

অসুস্থ: বাঙ্গিটোলা ব্লক হাসপাতালে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

মেনু ছিল ডাল, ভাত, বেগুন ভাজা, রুই মাছের ঝোল আর টোম্যাটোর চাটনি। অনুষ্ঠান বাড়িতে এই খাবার খেয়েই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন অন্তত দেড়শো জন। অসুস্থদের মধ্যে ১৪ জন শিশু ও ৪৬ জন মহিলা আছেন। কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলা পঞ্চায়েতের জোতকস্তুরী গ্রামের ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে ওই খাবার খেয়ে শুক্রবার রাত থেকে তাঁরা অসুস্থ হয়ে গ্রামীণ হাসপাতালে একের পর এক ভর্তি হতে থাকেন। শনিবার দুপুর পর্যন্ত একাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁদের মালদহ মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, খাবার থেকে বিষক্রিয়াতেই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মারাত্মক পেট খারাপ, বমি, মাথাঘোরার উপসর্গ রয়েছে। সঙ্গে অনেকের আবার জ্বরও চলে এসেছে।

এ দিকে বাড়তি রোগীদের ভিড়ে বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালের অবস্থা তথৈবচ। জানা গিয়েছে, হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা মাত্র ৩০টি। তাঁরা ভর্তি হওয়ার আগে হাসপাতালে ৫২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। ফলে এক শয্যায় কার্যত দু’জন করে রোগী ছিলেনই। তার উপরে শুক্রবার রাত থেকে একে একে ১৫০ জনের মতো রোগী চলে আসায় তাঁদের ওয়ার্ডের মেঝে, কড়িডরের মেঝেতে রেখেই চিকিসা চলছে। ফলে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে রোগীদের পরিজনদের মধ্যে। এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস ঝাঁ, সুদীপকুমার মিশ্র, অশোক প্রামাণিকরা অভিযোগ করেন, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ মাত্র তিন জন চিকিৎসক ও কয়েক জন নার্স এই বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা করছেন। জেলা থেকে বাড়তি চিকিৎসক, নার্স বা মেডিক্যাল টিম হাসপাতালে পাঠানো হয়নি। যদিও জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ অমিতাভ মণ্ডল বলেন, “এ দিন আমি নিজে মেডিক্যাল টিম নিয়ে হাসপাতাল ও জোতকস্তুরী গ্রামে গিয়েছিলাম। বাঙিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসা ঠিকঠাক চলছে। যাঁরা বেশি অসুস্থ ছিলেন তাঁদের মালদহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।’’

Advertisement

গত ২ ফেব্রুয়ারি গ্রামের এক বাসিন্দার স্ত্রী মারা যান। বৃহস্পতিবার তাঁর শ্রাদ্ধ উপলক্ষে প্রায় এক হাজার গ্রামবাসী নিমন্ত্রিত ছিলেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৌশিক মিস্ত্রি বলেন, ‘‘২০ জনকে মালদহে রেফার করা হয়েছে। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।’’ হাসপাতালে চার মেয়ে চম্পা, আশা, মৌসমী ও সীমাকে নিয়ে ভর্তি দয়মন্তী চৌধুরী বলেন, “আমার সঙ্গে মেয়েরাও সব বমি করতে শুরু করে। পরিস্থিতি বিগড়ে যাওয়ায় স্বামী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন