CV Ananda Bose

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রাজ্যপালের কাছে দরবার পাহাড়ের তৃণমূল বিরোধী মহাজোটের

দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে। পঞ্চায়েত ভোটে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ১২:২২
Share:

পাহাড়ের তৃণমূল বিরোধী মহাজোটের নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — নিজস্ব চিত্র।

গোটা রাজ্যের সঙ্গে পাহাড়েও এ বার অনুষ্ঠিত হচ্ছে পঞ্চায়েত ভোট। বাংলার অন্যত্র ত্রিস্তর ভোট হলেও পাহাড়ে রয়েছে দ্বিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা। সেই ভোটে যথাযথ নিরাপত্তার দাবি করে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দিলেন পাহাড়ে তৃণমূল বিরোধী মহাজোটের নেতারা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার নেতৃত্বে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ-সহ একাধিক তৃণমূল বিরোধী দল রাজ্যপালের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানায়।

Advertisement

গত জিটিএ ভোটের পর থেকেই পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে গিয়েছে। পুরভোটে বিপুল জয়ের পরেও দার্জিলিং পুরসভা ধরে রাখতে পারেনি হামরো পার্টি। পাহাড়ের অন্যতম রাজনৈতিক শক্তি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও এখন স্রেফ অতীতের ছায়া। ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। ডানা মেলছে তৃণমূলও। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল বিরোধী মহাজোট করে এক ছাতার তলায় এসেছেন বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ডরা। তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে বিজেপি। দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজুর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে রাজ্যপালের সঙ্গে পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠক সারল সেই মহাজোট। মূল দাবি, পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন।

বৈঠক শেষে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘শান্তির বাতাবরণে নির্বাচন হওয়া উচিত। নির্বাচন এবং ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওঁরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন। উচ্চ আদালতের যে রায় রয়েছে, তা মেনেই ভোট হওয়া দরকার। এ সব কারণেই আমি ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’ থেকে কাজ শুরু করেছি।’’

Advertisement

বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিগত দিনে চোপড়ার ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত। পাহাড়ে নোংরা রাজনীতি চালাচ্ছে তৃণমূল ও অনিত থাপার দল। মহাজোটের দলগুলিকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ে গণতন্ত্র বলে আর কিছু নেই। রাজ্যপালের কাছে আমাদের আবেদন, সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে আমাদের আরও আবেদন, ভোট শেষ হওয়ার পর ছ’সপ্তাহ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী সেই জেলাতেই মোতায়েন থাকুক। গোলমালের সমস্ত ঘটনাই জেলাশাসক ও এসপিকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’’

স্মারকলিপিতে মূল অভিযোগ অনিতের দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দিকে। প্রত্যাশিত ভাবেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। মুখপাত্র এসপি শর্মা বলেন, ‘‘সব থেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পাহাড়েই হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কোনও হিংসার খবর নেই। জিটিএ নির্বাচনও একই ভাবে হয়েছিল। আমরা গানবাজনার মাধ্যমে নির্বাচনে প্রচার করছি। আসলে, মহাজোট শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে হরেক রকম অজুহাত তৈরি করছে। ওদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া নেই!’’

দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি (পাহাড়) শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। অন্য সময় এদের দেখা যায় না, শুধুমাত্র ভোটের সময় কোথা থেকে যেন উঠে আসে। পাহাড় সম্পূর্ণ শান্ত। দয়া করে তাতে ঘি ঢালতে যাবেন না।’’

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পাহাড়ের মহাজোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরেই রাজ্যপাল রওনা দেন কালিম্পংয়ের উদ্দেশে। ডেলোতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর কথা রাজ্যপালের। তাঁর মুর্শিদাবাদ সফর বাতিল করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন